কিশোর পাসোয়ান। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির নকশা তৈরি করে দেওয়ার নাম করে দফায় দফায় টাকা নেওয়া, বাড়ি তৈরি করতে গেলে দলীয় কার্যালয়ে ডেকে মানসিক অত্যাচার এমনকি, রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। সেই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরেই বৃদ্ধ কিশোর পাসোয়ান (৬৫) হৃদরোগে মারা গিয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। যদিও অভিযোগ মিথ্যা, দাবি করেছেন কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম।
বুধবার দোষীদের গ্রেফতার করার দাবিতে বর্ধমান থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিজেপির জেলা সাংগঠনিকের সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর দাবি, “দেশের যে কোনও প্রান্তে যে কোনও প্রদেশের নাগরিকেরা থাকতে পারেন। সেখানে ওই ধরনের মন্তব্য বিভেদ তৈরি করছে। আর ওই প্রাক্তন কাউন্সিলরের অত্যাচার, তোলাবাজির কথা সবাই জানেন। পুলিশের উচিত, অভিযোগটিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। অভিযোগ হয়েছে যখন, তখন নিশ্চিত ভাবেই পুলিশ তদন্ত করবে। আমরা মনে করছি, এই ধরনের অভিযোগের সারবত্তা নেই।’’ জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার)-র তদারকিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
কিশোরবাবু রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। বর্ধমান শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ভাড়া থাকতেন তিনি। দেড় বছর আগে ওখানেই লোকো এলাকায় দু’কাঠা জমি কেনেন। তাঁর স্ত্রী পুতুল পাসোয়ানের অভিযোগ, জমি কেনার পরেই সৈয়দ মহম্মদ সেলিম ও তাঁর লোকেরা দেখা করে জানান, বাড়ির নকশা থেকে অন্য কাগজপত্র, জলের ব্যবস্থা সব হয়ে যাবে। দফায় দফায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। কয়েকমাস আগে জানানো হয়, নকশা হয়ে গিয়েছে। বাড়ি তৈরি করতে পারেন। কিন্তু বাড়ি তৈরি শুরু করার পরেই ফের টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুতুলদেবীর দাবি, ‘‘ওরা বলে নকশা নেই, বাড়ি করছেন কেন। পুরসভা থেকে নকশা করে আনার পরে বাড়ি করবেন। তার পরেই বাড়ির কাজ আটকে দেওয়া হয়।’’
লিখিত অভিযোগে তাঁর দাবি, বাড়ির কাজ বন্ধ ও নকশা তৈরির টাকা ফেরতের ব্যাপারে কথা বলতে তাঁর স্বামী গত সোমবার প্রাক্তন কাউন্সিলরের পার্টি অফিস খালাসিপাড়ায় যান। সেখানে টাকা ফেরত তো দূর, রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তারপর থেকে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। কিশোরবাবু ছেলে, ঝাড়খণ্ড সরকারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শ্যাম পাসোয়ানের দাবি, “বাবাকে টাকা দিতে বারণ করেছিলাম। বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিল। এ ভাবে এক জন কাউন্সিলর ঠকাবে, বাবা ভাবতে পারেননি। প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা চলে যাচ্ছে, আবার বাড়ি তৈরিও আটকে গেল, এ সব চিন্তা করতে গিয়েই বাবা মারা গেলেন।’’
সৈয়দ মহম্মদ সেলিম কোনও রকম তোলাবাজির অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “মিথ্যা দিয়ে আমাকে কাবু করা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy