Advertisement
০৩ মে ২০২৪

চোলাই রুখতে চলল অভিযান, ধৃত ১৫

গলসির একটি ঝুপড়িতে বসে চোলাই ও দেশি মদ বিক্রি করার সময় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দু’টি জায়গা থেকে ২২০টি লিটার চোলাই উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও খণ্ডঘোষ ও মাধবডিহি থেকে এক জন করে চোলাই কারবারিকে ধরেছে পুলিশ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও বর্ধমান: শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৪
Share: Save:

পড়শি জেলায় মদে বিষক্রিয়ায় দশ জনের মৃত্যুতে অভিযোগ উঠেছিল, কালনা থেকেই চোলাই মদ যায় সেখানে। রাতারাতি জেলা পুলিশ ও আবগারি দফতর অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করল ১৫ জনকে। মোট ৪৭০ লিটার চোলাই ও চোলাই তৈরির ২৯৮০ লিটার উপকরণ পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়াও ৭টি হাঁড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

শান্তিপুরের ঘটনার পরে গত কালই জয়দেব সাঁতরা নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ দিনও কালনা থেকে তিন জনকে ধরা হয়েছে। তাঁদের এক জনের বাড়ি নান্দাইয়ে, বাকি দু’জন পূর্বস্থলীর বেলেরহাট ও কাষ্ঠশালীর বাসিন্দা। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, কালনার হাঁসপুকুর, শাসপুর, হাসনহাটির মতো গ্রামে চোলাইয়ের কারবারের সন্ধান মিলেছে। বড় মাপের কারবার না হলেও কিছু চোলাই যে ভাগীরথী পেরিয়ে ও পাড়ে যেত তার প্রমাণ মিলেছে।

পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকায় যে চোলাইয়ের কারবারিরা রয়েছেন তা স্বীকার করেছে পঞ্চায়েত। প্রধান তাপস সরকার বলেন, ‘‘কয়েকজন ব্যবসায়ী হুগলি থেকে চোলাই এনে ব্যবসা চালান। পঞ্চায়েতও চায় সাধারণ মানুষের স্বার্থে কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ প্রশাসন।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শান্তিপুরের ঘটনার কথা চাউর হতেই বেশির ভাগ কারবারিরা গা ঢাকা দেন। মাটির নীচে পুঁতে ফেলা হয় চোলাই, তার নানা সরঞ্জাম। ফলে ডেপুটি এক্সসাইজ কালেক্টরের নেতৃত্বে দীর্ঘ অভিযান চালিয়েও বেশির ভাগ জায়গা থেকে খালি হাতে ফেরেন কর্তারা।

আবগারি দফতর জানিয়েছে, বুধবার রাতে মেমারির মণ্ডলগ্রামের হাজরা পাড়ায় অভিযান চলে। আগে এখানে বাধা পেয়ে ফিরতে হয়েছে কর্তাদের। এ দিন তাই যৌথ অভিযান হয়। তবে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি। পুলিশের দাবি, এখান থেকে চোলাই মেমারি ছাড়াও পাশের মন্তেশ্বর, কালনায় পাঠানো হয়। একই ঘটনা ঘটে ভাতারের বড় বেলুন গ্রামেও। আবগারি দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘একটা ঘটনার পর চোলাই কারবারিরা সজাগ থাকে। পরপর কয়েকটি গাড়ি দেখে তারা বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে।’’

বর্ধমান, ভাতার, মেমারি ও মঙ্গলকোটের ১৭টি জায়গাতেও অভিযান চলে। ৮টি মামলাও রুজু হয়েছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশ জামালপুর, গলসি, খণ্ডঘোষ, মাধবডিহি-সহ বেশ কয়েকটি থানা এলাকায় অভিযান চালায়। জেলা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, জামালপুরের চক আঝাপুরে দু’জন চোলাই কারবারিকে হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়। গলসির একটি ঝুপড়িতে বসে চোলাই ও দেশি মদ বিক্রি করার সময় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দু’টি জায়গা থেকে ২২০টি লিটার চোলাই উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও খণ্ডঘোষ ও মাধবডিহি থেকে এক জন করে চোলাই কারবারিকে ধরেছে পুলিশ।

চোলাইয়ে বিষক্রিয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ইটভাটা শ্রমিকদের মধ্যেও। কালানার এক ইটভাটার ম্যানেজার জানান, চোলাইয়ের সঙ্গে চাটও দেয় কারবারিরা। সেই লোভে বহু শ্রমিকই সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। তবে এ দিন অনেককেই আফশোস করতে দেখা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adulterated Hooch Adulterated Liquor Illegal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE