পানীয় জলের জন্য গ্রামবাসীদের ভরসা নলকূপ ও কুয়ো। কিন্তু গরম পড়লেই শুকিয়ে যায় কুয়োগুলি। নলকূপ থেকেও মেলে না পর্যাপ্ত জল। পরিস্রুত জলের অভাবে পেটের রোগের সমস্যায় ভুগছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। এমনই অভিযোগ আউশগ্রাম ২ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। অভিযোগ, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের তরফে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে একাধিক বার দরবার করা হলেও সুরাহা হয়নি।
আউশগ্রাম ২ ব্লকে রয়েছে ছ’টি পঞ্চায়েত। জনসংখ্যা প্রায় পৌনে দু’লক্ষ। এলাকায় অন্যতম বড় সমস্যা এই পানীয় জল। ভাল্কি ও দেবশালা পঞ্চায়েতের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে সমস্যা সবচেয়ে বেশি। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাল্কি পঞ্চায়েতের ১৬টি সংসদের ১৪টিতে গরমে জলের সমস্যা চরমে উঠেছে। এই এলাকার প্রেমগঞ্জ, পঞ্চমহুলী, সাহেবডাঙা-সহ বিভিন্ন এলাকায় নলকূপ বা কুয়ো রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রাকেশ মুর্মু, ধনঞ্জয় মণ্ডলেরা জানান, প্রতি গ্রীষ্মেই সমস্যা চরমে ওঠে।
নলকূপেও পর্যাপ্ত জল মেলে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাঁরা জানান, বহু নলকূপই দীর্ঘদিনের পুরনো। তাই মাঝেমাঝেই দূষিত জল বেরোয়। সমস্যা হয় বর্ষাতেও। তখন কুয়োগুলি নোংরা জলে ভরে যায়। সেই জল থেকে এলাকায় পেটের রোগের প্রকোপ বাড়ে বলে অভিযোগ তাঁদের। পানীয় জলের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন ভাল্কি পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুমার বাউরি। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় নলকূপ ও কুয়ো তৈরি করে পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সেই সব জল পরিস্রুত না হওয়ায় সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা।’’ তিনি জানান, তিনটি জায়গায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মাধ্যমে জলের ব্যবস্থার জন্য কয়েক মাস আগে আবেদন করা হয়েছে।
একই সমস্যা দেবশালাতেও। সেখানে ১৭টি গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে রামচন্দ্রপুর, ধানতোড়, তিলঙ-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তা প্রবল। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অধিকাংশ সময়েই টিউবওয়েল থেকে জল পাওয়া যায় না। এই সব গ্রামের পাশেই কয়েকটি আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। তাঁরা অনেক সময় কুনুর নদীর জল খেতে বাধ্য হন। ব্যবহার করতে হয় পুকুরের জলও। দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সী জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে দু’টি জায়গায় জলের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও তা হয়নি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবশালায় একটি জায়গার মালিকানা নিয়ে সমস্যা থাকায় সেখানে জলের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। অপরটি যাতে দ্রুত চালু করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। ভাল্কিতেও শীঘ্র জলের ব্যবস্থা করা হবে বলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy