Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বন্দির হাতে মোবাইল, রুখবে জেলা পুলিশও

এই পরিকল্পনার কথা সামনে আসতেই এই সংশোধনাগারের কর্মী ঘাটতির বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

নতুন ব্যারাকের উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র

নতুন ব্যারাকের উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১৯
Share: Save:

আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বন্দি পালানোর ঘটনা হোক বা হুগলি জেলে আসামীদের মধ্যে গোলমাল, সব ক্ষেত্রেই নজরদারির অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এ ধরনের ঘটনা যাতে এড়ানো যায়, সে জন্য সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জেলা পুলিশও সংশ্লিষ্ট নানা জেলে গিয়ে নজরদারি চালাবে। শুক্রবার বর্ধমানে এসে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের ডিজি (কারা) অরুণকুমার গুপ্ত।

এ দিন বর্ধমান সেন্ট্রাল জেলের ভিতরে কারাকর্মীদের জন্য ব্যারাকের উদ্বোধন করতে এসে ডিজি (কারা) বলেন, ‘‘অনেক সময়েই দেখা যায়, সংশোধনাগারে থাকা সাজাপ্রাপ্ত বা অভিযুক্ত আবাসিকদের কাছে মোবাইল-সহ নানা কিছু মিলছে। আমাদের আধিকারিকেরা যেমন নজরদারি রাখছেন, তেমনি জেলা পুলিশের সঙ্গেও নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে কথা হয়েছে।” একই সঙ্গে রাজ্যের নানা সংশোধনাগারে কর্মী-ঘাটতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বছর দুয়েক আগে বর্ধমানকে সেন্ট্রাল জেলে উন্নীত করে রাজ্য সরকার। হাতে গোনা কয়েকজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ছাড়া বাকি প্রায় সকলেই বিচারাধীন বন্দি। বর্তমানে বর্ধমান সেন্ট্রাল জেলে আবাসিকের সংখ্যা ৬৫৭ জন। আলিপুর, দমদম-সহ বেশ কয়েকটি সেন্ট্রাল জেল থেকে আরও তিনশো সাজাপ্রাপ্তকে বর্ধমানে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে কারা দফতরের। সেই মতো কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারটি সাজানো হচ্ছে বলে কারা দফতর জানায়।

কিন্তু এই পরিকল্পনার কথা সামনে আসতেই এই সংশোধনাগারের কর্মী ঘাটতির বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে। কারণ, এই মুহূর্তে বর্ধমান সেন্ট্রাল জেলে কর্মী সংখ্যা ৮০ জন। ডিজি (কারা) বলেন, “বর্ধমানে ৩০-৪০ জন কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। তা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে একশো জন কারাকর্মী থাকার মতো ব্যারাকটি গড়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়াও ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করে মহিলা কর্মীদের জন্য ব্যারাক তৈরি করার কথা জানিয়েছে কারা দফতর। বছর খানেক আগে বর্ধমান-হুগলি ও বীরভূমের জন্য ডিআইজি (কারা) পদ তৈরি হলেও কোনও দফতর নেই। সে জন্য সংশোধনাগারের ভিতরেই ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা খরচ করে ডিআইজি দফতর তৈরি হবে বলে ডিজি (কারা) জানান।

ব্যারাক উদ্বোধনের আগে বর্ধমান সেন্ট্রাল জেল ঘুরে দেখেন অরুণবাবু। সঙ্গে ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, ডিআইজি (কারা) নবীন সাহা-সহ প্রমুখ। সংশোধনাগার সূত্রে জানা যায়, অরুণবাবু সংশোধনাগারে থাকা সাজাপ্রাপ্ত পুরুষ ও মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে যে স্বনির্ভর প্রকল্পগুলি চলছে, সেগুলি সম্পর্কেও খোঁজ-খবর নেন। পরে কারা বিভাগের বর্ধমান রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন অরুণবাবু। সেখানে বর্ধমান সেন্ট্রাল জেল-সহ বেশ কয়েকটি সংশোধনাগারে নিয়মিত মোবাইল মিলছে বলে জানা যায়। সেখানেই জেলা পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন ডিজি (কারা)। দফতর সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান সেন্ট্রাল জেলের সুপার শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষকে আলিপুর জেলের সুপার করে পাঠানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

District Police Convict mobile
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE