Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ইকড়ার কারখানায় ভাঙচুর, মারে নাম জড়াল তৃণমূলের

কাজে থাকতে হলে দেখা করতে হবে স্থানীয় তৃণমূল নেতার সঙ্গে— কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলে দেখা করতে এসেছিলেন জনা সাতেক কর্মী।

কারখানার সামনে ভাঙচুর হচ্ছে মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র।

কারখানার সামনে ভাঙচুর হচ্ছে মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

কাজে থাকতে হলে দেখা করতে হবে স্থানীয় তৃণমূল নেতার সঙ্গে— কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলে দেখা করতে এসেছিলেন জনা সাতেক কর্মী। বুধবার জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্পতালুকের এক পেরেক কারখানায় ওই কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল শাসক দলেরই একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ভাঙচুর চালানো হল কয়েকটি মোটরবাইকেও। প্রহৃত কর্মীরাও তৃণমূলেরই কর্মী হিসেবে পরিচিত।

এ দিন কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানাতে এসেছিলেন বীজপুরের বাসিন্দা কদম বাউরি, হরিচরণ বাউরি, স্বপন বাউরি, নরেশ লায়েক, মানস ধীবর, সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁদের অভিযোগ, মঙ্গলবার কারখানা ছুটির পরে জানানো হয়, তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তৃণমূল নেতা লালু বাউরির সঙ্গে দেখা না করলে কাজে যোগ দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দেন ম্যানেজার মনোজ অধিকারী। এ দিন তাঁরা কয়েক জন পড়শিকে নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে চান। কদমবাবুদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই তৃণমূল নেতা চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়, গুণধর বাউরি, লালু মাজিদের নেতৃত্বে এক দল দুষ্কৃতী লাঠি হাতে চড়াও হয়। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের মোটরবাইক। এর পরেই কদমবাবুরা স্থানীয় কাউন্সিলর রাখি কর্মকারের দ্বারস্থ হন।

শাসক দলের কর্মীদের একাংশের ধারণা, এই গোলমালের নেপথ্যে রয়েছে দলের গোষ্ঠী কোন্দল। তৃণমূল কর্মীরা জানান, রাখিদেবী ও প্রহৃত কর্মীরা দলে মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং লালুবাবু, চঞ্চলবাবু ও জামুড়িয়া ১ ব্লকের নতুন দলীয় সভাপতি সাধন রায় জেলা সভাপতি (শিল্পাঞ্চল) ভি শিবদাসনের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। বিধানসভা ভোটে জামুড়িয়ায় হারের পরে দু’টি ব্লক কমিটিই ভেঙে দেওয়া হয়। মন্ত্রীর অনুগামীদের অভিযোগ, এর পরেই এলাকার রাশ হাতে নিতে সচেষ্ট হন সভাপতির অনুগামীরা।

এ দিনের ঘটনা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর লোকজন পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছেন। কাউন্সিলর রাখিদেবী বলেন, ‘‘কাজ হারানো কর্মীদের পাশে দাঁড়াননি ব্লক সভাপতি। ওই কর্মীরা জানান, চঞ্চলবাবু তাঁদের সাধন রায়ের সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন। দলকে জানাব, কী ভাবে ওরা শ্রমিকদের নিয়ে গোষ্ঠী রাজনীতি করছে।’’ সাধনবাবুর যদিও দাবি, ‘‘মারামারি হয়নি। কর্মীদের বহিষ্কারের সঙ্গে গোষ্ঠী রাজনীতির যোগ নেই। সম্ভবত নোট-বাতিলের পরে খুচরোর অভাবে ওঁদের সাময়িক ভাবে সরানো হয়েছে। রাখীদেবীরা দলের পতাকা হাতে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি জেলাস্তরে জানাব।”

কারাখানার ম্যানেজার মনোজবাবু যদিও বলেন, “ওঁদের বহিষ্কার করা হয়নি। লালু দা’র কথা মতোই ওনার সঙ্গে কর্মীদের দেখা করতে যেতে বলি।’’ ভি শিবদাসন অবশ্য বলেন, “কোনও গোষ্ঠী কোন্দলের ঘটনা নয়। বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দল পদক্ষেপ করবে।’’ পুলিশ জানায়, অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ikra Factory TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE