Advertisement
০১ মে ২০২৪
Coal Mine

বাসিন্দাদের আপত্তি, খনির কাজ থমকে

সমাধান সূত্র বার করতে শনিবার বারাবনি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করে ইসিএল ও ওই বেসরকারি সংস্থা। গ্রামবাসীর দাবি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সমস্যা মেটাতে চলছে বৈঠক। শনিবার।

সমস্যা মেটাতে চলছে বৈঠক। শনিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৪
Share: Save:

রাষ্ট্রায়ত্ত খনি সংস্থা ইসিএল, একটি বেসরকারি সংস্থাকে বারাবনির ইটাপাড়ায় নতুন কয়লা খনি তৈরির জন্য বরাত দিয়েছে। কিন্তু বেসরকারি সংস্থাটি প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করতেই, শুক্রবার পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশ। সমাধান সূত্র বার করতে শনিবার বারাবনি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করে ইসিএল ও ওই বেসরকারি সংস্থা। গ্রামবাসীর দাবি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে, শুক্রবার থেকেই কাজ বন্ধ।

ইসিএলর সালানপুর এরিয়ার অন্তর্গত বারাবনির ইটাপাড়া অঞ্চলে এই খনি খোঁড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। ইসিএলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর নীলাদ্রি রায় বলেন, “ইসিএলের নিজস্ব জমিতেই মাইনস ডেভেলপিং অপারেশন (এমডিও) মডেলে খনিটি হবে। এখানে ভূগর্ভে, বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রচুর পরিমাণে উন্নত মানের কয়লা রয়েছে। খনিটি তৈরি হলে এলাকার আর্থিক উন্নয়ন হবে। স্থানীয়দেরও কর্মসংস্থান হবে।”

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু আগে এখানে একটি ছোট বেসরকারি ‘প্যাচের’ কাজ চলছিল। যে সংস্থা এই কাজ করছিল, তাদের কাজের মেয়াদ ফুরিয়েছে। এর পরেই বড় আকারে খনন-কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো, ছত্তীসগঢ়ের একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে।

কোথায়, কী পরিমাণে কয়লা মজুত আছে, তা খতিয়ে দেখছে বেসরকারি সংস্থাটি। শুক্রবার সকালে সিআইএসএফ-কে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তাবিত খনির অদূরে থাকা ভুঁইয়াপাড়ায় ড্রোজ়ার নামিয়ে জমি সমতলের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সেই কাজ করার সময়েই স্থানীয়েরা আপত্তি জানান। তাঁরা বলতে থাকেন, আগাম কিছু না জানিয়ে কাজ শুরু হওয়ায় বাড়ি ভাঙছে। আপত্তির জেরে কাজ থেমে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা অজয় বাউড়ি বলেন, “আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। পরিচারকের কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। এই সময় আমাদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।” অপর এক বাসিন্দা রুপালি মারাণ্ডির প্রতিক্রিয়া, “খনি হোক আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের পুনর্বাসন দিতে হবে।” ভুঁইয়াপাড়ার বাসিন্দারা বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান।

এই পরিস্থিতিতেই শনিবার বৈঠক হয়েছে। ইসিএলের দাবি, ভুঁইয়াপাড়াটি তাদের জমিতে দখল করে তৈরি করা হয়েছে। জমি খালি করার জন্য দু’বার নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিংহ যদিও দাবি করেন, “প্রতিটি পরিবার কম করে ৫০ বছর ধরে ওই জমিতেই বাড়ি বানিয়ে থাকছে। রাতারাতি এলাকাবাসীর উঠে যাওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই। পাশাপাশি, গ্রামে খনি হওয়ায় স্থানীয়দের চাকরির বিষয়টিও খনি কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে।” বৈঠকে বেসরকারি সংস্থাটির ম্যানেজার রবি আগরওয়াল বলেন, “পুনর্বাসনের প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয়দের চাকরির বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।” এই আশ্বাসের পরে পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক হলেও, কাজ শুরু হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Mine ecl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE