Advertisement
E-Paper

আছেন গোপীনাথ, তবু ফাঁকাই পড়ে মেলার মাঠ

ভিড় কই? মাঠ তো ফাঁকা? প্রথমবার মেলায় এসে চায়ের দোকানে বসে বেশ অবাক হয়েই প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা জগন্নাথ বাবা। দোকানি কিছু বলার আগেই তিনি বলে উঠলেন, “দোকান অনেক। পুলিশ-স্বেচ্ছাসেবকও প্রচুর। কিন্তু মানুষের ভিড় নেই।” তারপর জবাব পাওয়ার আগেই চলে গেলেন গোবিন্দ ঘোষের সমাধিস্থলে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০০:৩১
চলছে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। ছবি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

চলছে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। ছবি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভিড় কই? মাঠ তো ফাঁকা?

প্রথমবার মেলায় এসে চায়ের দোকানে বসে বেশ অবাক হয়েই প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা জগন্নাথ বাবা। দোকানি কিছু বলার আগেই তিনি বলে উঠলেন, “দোকান অনেক। পুলিশ-স্বেচ্ছাসেবকও প্রচুর। কিন্তু মানুষের ভিড় নেই।” তারপর জবাব পাওয়ার আগেই চলে গেলেন গোবিন্দ ঘোষের সমাধিস্থলে।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরোহিতদের কোলে চেপে সমাধিস্থলে এলেন গোপীনাথ। কাছা পড়ে ভক্তের শ্রাদ্ধ ও পিণ্ডদানও করলেন ।

বুধবার থেকে শুরু হয়েছে অগ্রদ্বীপের গোপীনাথ মেলা। গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধ মেলা নামেও পরিচিত এই মেলা। কথিত আছে, চৈতন্যদেবের অন্যতম পার্ষদ ছিলেন গোবিন্দ ঘোষ। পরবর্তীতে শ্রীচৈতন্যের নির্দেশে সংসার করতে শুরু করেন। পরে শ্রীচৈতন্য নিজে হাতে অগ্রদ্বীপ গ্রামে ভাগীরথীর তীরে গোপীনাথের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে তাঁর পার্ষদকে গোপীনাথের সেবা করার দায়িত্ব দিয়ে যান। কিন্তু পাঁচ বছরের শিশু সন্তান মারা যাওয়ায় সমস্ত রকম ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন গোবিন্দ ঘোষ। শোনা যায়, তখন চৈতন্যদেব গোবিন্দ ঘোষকে বলেন, তোমার মৃত্যুর পর আমি পুত্র হয়ে পারলৌকিক কাজ করব। গোবিন্দ ঘোষের প্রয়াণের পরে পুত্র হিসেবে পারলৌকিক কাজও করেন শ্রীচৈতন্য। সেই থেকেই গোপীনাথ পুত্র হয়ে গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেন। অনুষ্ঠানকে ঘিরে জমজমাট মেলাও বসে প্রতিবার।

নির্বাচন বিধি চালু হয়ে গেলেও কাটোয়া ২ ব্লক প্রশাসন মেলার সমস্ত রকম আয়োজন করে রেখেছে। দর্শনার্থীদের জন্য নৌকার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। অস্থায়ী শৌচাগার, ভাগীরথীর দুই পাড়ে আলোর ব্যবস্থা সবই করা হয়েছে। নৌকা করে মালপত্র নিয়ে গিয়ে মেলার মাঠে দোকান তৈরির কাজও শেষ। প্রতিবারের মতো নাগরদোলা থেকে হরেকরকম খেলা নিয়ে ব্যবসায়ীরাও হাজির। কিন্তু যাঁদের জন্য এত আয়োজন, তাঁরা কোথায়? ফাঁকা মাঠ, গোপীনাথতলাতেও ঘুরে ফিরে উঠছে এই প্রশ্ন।

গোপীনাথ মন্দিরের পুরোহিত দিলীপ মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “তিথির গোলমালে গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিনেই অগ্রদ্বীপ জনমানব শূন্য। অথচ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানকে ঘিরেই এই মেলা।” তিনি জানান, দোলের পরে কৃষ্ণা একাদশী তিথিতে গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সময় বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে দুপুর বারোটা, যা পূর্ব নির্ধারিত। সাধারণত একাদশী তিথি যে দিন ছাড়ে সে দিনই ওই তিথি পড়ে। এ বার তা আগেই পড়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। গোপীনাথ সেবা সমিতির সম্পাদক জহর দে বলেন, “মেলার প্রথম দিন ফাঁকাই ছিল। তবে আশা করছি বাকি দিনগুলোতে ভিড় বাড়বে।”

agradwip soumen dutta gopinath festival
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy