Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয় নয়, ক্ষোভ বিরোধীদের

দিনের শুরুটা হয়েছিল শান্তিপূর্ণ ভাবেই। কিন্তু দিনের শেষ বেলায় দুর্গাপুর শহরে ভোট নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠল। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য সব ক’টি অভিযোগই অস্বীকার করেছে। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক তথা সহকারি রিটার্নিং অফিসার কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “রাজনৈতিক দল, ভোটার কিংবা সংবাদ মাধ্যম--যে কোনও জায়গা থেকে খবর পাওয়া মাত্রই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। মোটের উপর এ দিন ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণই হয়েছে।”

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৪ ০১:৪৪
Share: Save:

দিনের শুরুটা হয়েছিল শান্তিপূর্ণ ভাবেই। কিন্তু দিনের শেষ বেলায় দুর্গাপুর শহরে ভোট নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠল। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য সব ক’টি অভিযোগই অস্বীকার করেছে।

দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক তথা সহকারি রিটার্নিং অফিসার কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “রাজনৈতিক দল, ভোটার কিংবা সংবাদ মাধ্যম--যে কোনও জায়গা থেকে খবর পাওয়া মাত্রই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। মোটের উপর এ দিন ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণই হয়েছে।”

এ দিন সকালে ইভিএম খারাপ থাকায় ফুলঝোড় প্রাথমিক স্কুল, ফার্টিলাইজার স্কুল, বিদ্যাসাগর মডেল স্কুল এবং চন্ডীদাস এলাকার একটি বুথে ঘণ্টা খানেক বন্ধ ছিল ভোটগ্রহণ। পরে নতুন ইভিএম এনে ওই কেন্দ্রগুলিতে নতুন করে ভোট শুরু হয়। সকালে সিটি সেন্টার এলাকায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, সব বুথের বাইরেই তৃণমূল ও সিপিএমের ক্যাম্প অফিস ছিল। দু’দলের পতাকাও ছিল প্রায় সমান সমান। সিপিএমের ক্যাম্প অফিসগুলিতে বয়স্কদের সংখ্যা বেশি ছিল। তৃণমূলের ক্যাম্পের অধিকাংশই ছিলেন তুলনায় কমবয়সী। একই ছবি দেখা গিয়েছে বিধাননগর এলাকাতেও। শহর জুড়ে বুথে বুথে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারা। অনেকগুলি বুথে উপস্থিত ছিলেন ভোটবন্ধুরা। ভোটারদের জন্য ছিল পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা। রোদ থেকে বাঁচতে ছিল ত্রিপল।

এ দিনের ভোটের প্রথম তিন ঘণ্টা শান্তিতেই মিটে যায়। কিন্তু বেলা বাড়ার পরেই বদলাতে থাকে পরিস্থিতি। সিপিএম অভিযোগ করে, বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের মোটরবাইক বাহিনী ঘুরছে। সিপিএমের আরও অভিযোগ করে, হরিবাজার এলাকায় বুথের কাছেই রান্না করে ভোটারদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করছে তৃণমূল। সেখানে মদ বিলিও চলছে। দিনের শেষে সিপিএম নেতারা অভিযোগ করেন, অনেক ভোটারই নিজের ভোট দিতে পারেননি। দুর্গাপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “নির্বাচন কমিশনের উপর ভরসা ছিল। কিন্তু তাদের ভূমিকা কার্যত টেরই পাওয়া গেল না।”

নেতাজি কলোনি, তামলা, তামলা ব্রিজ প্রভৃতি এলাকায় দলীয় এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। তাঁদের আরও অভিযোগ, বিকালের দিকে কয়েকটি জায়গায় প্রিসাইডিং অফিসারকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতা উমাপদ দাসের অভিযোগ, “শান্তিপূর্ণ ভাবে রিগিং করা হয়েছে। দুর্গাপুর শহরে আমরা এমনটা আশা করিনি। বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকেও না থাকার মতো আচরণ করেছে।” বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীর অভিযোগ, “নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আসলে তো পর্বতের মুষিক প্রসব হল।”

যদিও বিরোধীদের সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের দাবি, ‘শান্তিপূর্ণ’ ভোট হয়েছে। দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “গত তিন বছরে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের উপরেই ভরসা রেখেছেন শিল্পাঞ্চলের মানুষ।” বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর পাল্টা, “নির্বাচন কমিশনই তো বলেছে ভোট শান্তিপূর্ণ। যদিও আমাদের কারও শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই। বিরোধী দলগুলির পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই তারা রাজনৈতিক ভাবে লড়তে না পেরে মায়াকান্না জুড়েছে। কোনও দলের সংগঠন না থাকলে আমরা তো আর তাঁদের হয়ে এজেন্ট বসিয়ে দিতে পারি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata shith durgapur lok sabha election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE