মাসখানেক আগে দলীয় পতাকা ঝুলিয়ে ‘জনজাগরণ সঙ্ঘ’য়ের নাম করে একটি বাড়ি দখল করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে হাইকোর্টের নির্দেশে কাটোয়া শহরের চাউলপট্টি এলাকার ওই বাড়ির দখল মালিককে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। মালিক ষড়ানন কর্মকার বলেন, “আমরা বাড়ির দখল নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আদালতের নির্দেশে পুলিশ আমাদের বাড়ির দখল দিল।” ঘটনাস্থলে ছিলেন কাটোয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস, ওসি পীযূষ লায়েক প্রমুখ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২১ নভেম্বর ওই ফাঁকা বাড়িটির দখল নেয় ‘জনজাগরণ মঞ্চ। বারান্দায় তৃণমূলের পতাকাও ঝোলানো হয়। যদিও ষড়াননবাবুর দাবি ছিল, জনজাগরণ মঞ্চের নামে বাড়িটি আসলে তৃণমূল দখল করেছে। অভিযোগ জানিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠিও পাঠান তিনি। তাঁর অভিযোগ, জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শমীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (অভিযোগপত্রে তমাল বলে উল্লেখ রয়েছে) ও তৃণমূল নেতা শ্যামল মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাড়ি দখল করা হয়েছে। কাটোয়া আদালাতে মামলাও করেন তিনি। পরে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর কাটোয়া থানা ওই দুই নেতার নামে বাড়ি দখলের অভিযোগ এনে মামলা রুজু করে।
প্রশাসন ও স্থানীয়় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়ির মালিক ছিলেন ষড়াননবাবুর দিদিমা দুলালী কর্মকার। তিনি ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর বাড়িটি নাতি ষড়াননবাবুকে দান করেন। তারপর থেকে মাঝেমধ্যেই ওই বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। পুলিশের কাছে লেখা চিঠিতে ষড়াননবাবুরা দাবি করেন, বাড়ি দখল হয়ে যাওয়ার পরে তাঁরা সপরিবারে আদি বাড়ি নদিয়ার নাকাশিপাড়ার মাটিয়ারিতে বাস করছিলেন। সেখান থেকেই হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। সেখানেও তিনি ওই দুই তৃণমূল নেতার নির্দেশে বাড়ি দখল হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
ওই দুই নেতা অবশ্য আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিলেন, তাঁরা কোনও ভাবেই বাড়ি দখলে সঙ্গে যুক্ত নন। মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। এরপরে গত ৬ জুন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক কাটোয়া থানাকে বাড়ি দখল করে ষড়াননবাবুর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কাটোয়া থানার ওসিকে বিচারপতির আরও নির্দেশ, রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পরে সম্ভব হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মালিক যাতে বাড়ির ভিতর ঢুকতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে হবে।
কাটোয়া মহকুমা পুলিশের এক কর্তা জানান, কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরেই আমরা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলে শুক্রবারই মালিককে বাড়ির দখল দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy