Advertisement
২১ মে ২০২৪

জৈন মূর্তি চেয়ে পুলিশকে চিঠি পাঠাল বিশ্ববিদ্যালয়

কালনা থানার মালখানায় পড়ে থাকা ১০-১১ শতকের পঞ্চতীর্থিকা জৈন মূর্তি নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এই চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে রয়েছে একটি চমৎকার মিউজিয়াম। যেখানে এমনই বেশ কিছু ঐতিহাসিক মূর্তি রয়েছে। এই সংগ্রহশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী বা গবেষকেরা ছাড়াও প্রচুর মানুষ সেই ঐতিহাসিক নিদর্শন, মূর্তি দেখতে আসেন। তাই এই মূর্তিটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় রাখা উচিত।

রানা সেনগুপ্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৩
Share: Save:

কালনা থানার মালখানায় পড়ে থাকা ১০-১১ শতকের পঞ্চতীর্থিকা জৈন মূর্তি নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এই চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে রয়েছে একটি চমৎকার মিউজিয়াম। যেখানে এমনই বেশ কিছু ঐতিহাসিক মূর্তি রয়েছে। এই সংগ্রহশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী বা গবেষকেরা ছাড়াও প্রচুর মানুষ সেই ঐতিহাসিক নিদর্শন, মূর্তি দেখতে আসেন। তাই এই মূর্তিটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় রাখা উচিত।

এই পঞ্চতীর্থিকা মূর্তিটি কালনা থানার বৈদ্যপুরে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ চালার সময় একটি পুকুর খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হয়েছিল গত ২০১৩ সালের ১৮ মে। পরে মুর্তিটির কোনও দাবিদার না মেলায়, পুলিশ সেটি কালনা থানায় নিয়ে এসে মালখানায় রাখে। কালনা থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার পুলিশ সুপারকে লেখা গত ৬ জুনের চিঠিতে জানান, ওই মূর্তিটির ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। তাই কালনা মালখানা থেকে সেটিকে কোনও সংগ্রহশালায় পাঠালে সেটিকে উপযুক্ত মর্যাদা দেওয়া হবে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালার কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানা বলেছেন, “প্রায় তিন ফুট লম্বা, দেড় ফুট চওড়া বেলে পাথরে তৈরি ওই পঞ্চতীর্থিকা মুর্তিটির ঐতিহাসির গুরুত্ব প্রচুর। মূল মূর্তি ঋ

ষভনাথের নির্মাণ শৈলী অনুসরণে গড়া এই পঞ্চতীর্থিকা গবেষকদের কৌতুহল বাড়াবে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই আমরা ওই মুর্তিটিকে মিউজিয়ামে রাখতে আগ্রহী।”

বিশেষজ্ঞেরা জানান, রাঢ় অঞ্চলে জৈন প্রভাব ছিল। গঙ্গা ও অজয় নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে আগেও জৈন মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। এই মূর্তিটি অজিতনাথেরও হতে পারে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞেরা। মাথায় তিন ভাঁজ করা ছাতা রয়েছে। মূর্তির নীচে একটি প্রাক গৌড়ীয় লিপিতে সংস্কৃত ভাষায় লেখ রয়েছে।

জেলার এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেছেন, “মুর্তিটি বর্ধমান বিশ্ববিদালয়কে হস্তান্তর করতে আমাদের তরফে কোনও আপত্তি নেই। তবে এই ব্যাপারে জেলাশাসকের অনুমতি দরকার। সেই অনুমতি মিললে আমরা ওই ঐতিহাসিক মূর্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামে পাঠাব।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই মূর্তি হাতে পেতে জেলাশাসক সৌমিত্রমোহনকে চিঠি লেখা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালা সূত্রে আরও দাবি করা হয়েছে, এমন অনেক ঐতিহাসিক গুরুত্বের মূর্তি, মুদ্রা-সহ নানা কিছু জেলার বিভিন্ন থানার মালখানাগুলিতে ছড়িয়ে রয়েছে। সেগুলি পেলে হয়ত স্থানীয় ইতিহাসের ধারাটি পুনর্লিখিত হতে পারে। তাই বিভিন্ন মালখানায় থাকা প্রত্নসামগ্রীর তালিকা তৈরি করে তা জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jain statue letter to police burdwan university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE