Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঝুলছে তার, টাকা বরাদ্দ হলেও এগোয়নি কাজ

বছর ছয়েক আগে টাকা বরাদ্দ হলেও আসানসোল বাজার এলাকায় এখনও বিদ্যুত্‌ সংযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে মাটির তলায় নিয়ে যাওয়ার কাজ এগোয় নি তেমনভাবে। তার জেরে বাড়ছে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা।

তারের জট। আসানসোল বাজারে তোলা নিজস্ব চিত্র।

তারের জট। আসানসোল বাজারে তোলা নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২৬
Share: Save:

বছর ছয়েক আগে টাকা বরাদ্দ হলেও আসানসোল বাজার এলাকায় এখনও বিদ্যুত্‌ সংযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে মাটির তলায় নিয়ে যাওয়ার কাজ এগোয় নি তেমনভাবে। তার জেরে বাড়ছে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা।

আসানসোল বড় বাজার এলাকা জুড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফর্মার ও সুইচগিয়ারের তার ছড়িয়ে রয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ওই বাজারে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ আসেন। ওইসব বিদ্যুতের তারের পাশ দিয়েই পথচারী ও ক্রেতাদের যেতে হয়। বাজার এলাকার এলাকার বাসিন্দা জলি দত্ত বলেন, “সব্জি থেকে গোলদারি সবকিছুর জন্যই এই বাজারই ভরসা। কিন্তু চারদিকে বিদ্যুতের তারগুলো এমনভাবে রয়েছে যে এখানে আসতেই ভয় লাগে।’’ সব্জি বাজারের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে প্রতিটি বিদ্যুতের খুঁটিতেই তারের জাল ছড়িয়ে রয়েছে। সামান্য উঁচুতেই বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। সব্জি বাজারে আসা এক ক্রেতা সুখেন্দুবিকাশ ঘোষ বলেন, “মাথার তারগুলো এমনভাবে রয়েছে যে ভয় হয় কোনওদিন তড়িদাহত হয়ে যাব।” শুধু ক্রেতারাই নয়, বিপদের আশঙ্কায় ভীত ব্যবসায়ীরাও। বিক্রেতা প্রসূন মণ্ডল বলেন, “বিদ্যুতের তারগুলো একেবারে জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয় নি।’’ শুধু তাই নয়, আসানসোল বাজারের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরলেই দেখা যায় কয়েকশো দোকানে বিক্রী হচ্ছে বিভিন্ন দাহ্য বস্তু। ফুটপাথের দোকানগুলি তো বটেই বড় দোকানগুলির সামনেও অনেকটা অংশ জুড়ে পলিথিনের ছাউনি রয়েছে। এই অবস্থায় সামান্য সর্ট সার্কিট হয়ে যে কোনও দিন বড় বিপদ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাজার এলাকার বাসিন্দা থেকে বিক্রেতা সকলেই। ঘাঁটি গলিতে আবার রাস্তার উপরেই ট্রান্সফর্মার থাকায় বিপদের আশঙ্কা করছেন পথচারীরা।

রাজ্য বিদ্যুত্‌ বন্টন কোম্পানির আসানসোল শাখা কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজার এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থার খোল-নলচে বদলে ফেলার জন্য বছর ছয়েক আগে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে পুরো কাজটির জন্য খরচ ধরা হয় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ণ পর্ষদের তরফে আর্থিক অনুদানও মেলে। ঠিক হয়, বাজারের সমস্ত বিদ্যুতের খুঁটি তুলে ফেলে সমস্ত তার মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু বছর কেটে গেলেও বিদ্যুত বন্টন কোম্পানির তরফে কোনও কাজ করা হয় নি বলে অভিযোগ। বন্টন কোম্পানির আসানসোলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শ্রীমন্ত রায় যদিও বলেন, “আসানসোল বাজার এলাকার ব্যবসায়ীদের একাংশ আপত্তি করায় এতদিন কাজ শুরু করা যায় নি। তবে এখন সমস্যা মিটে গিয়েছে। শীঘ্রই দরপত্র ডেকে কাজ শুরু করা হবে।’’ ব্যবসায়ীদের আপত্তির কথা মানতে চান নি আসানসোল বণিক সভার সভাপতি সুব্রত দত্ত। তিনি বলেন, “এই কাজ হলে ব্যবসায়ীদেরই সুবিধা হবে। বিদ্যুত্‌ সংযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ হলে ব্যবসা করতেও সুবিধা হবে আমাদের।” সাধারণ নাগরিকদের যদিও দাবি, কোনও বিবাদ নয়, আশু বিদ্যুত্‌ সংযোগ ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে, যাতে দুর্গাপুরের মামরা বাজারের সর্ট সার্কিট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না হয় আসানসোলেও। সব শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াার আশ্বাস দিয়েছেন আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

wire sushanta banik asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE