Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

তৃণমূলের দ্বন্দ্বে কমিটি গড়া হল না ক্রীড়া সংস্থায়

সংস্থা চলছে প্রায় ৬৪ বছর ধরে। কমিটি তৈরি বা পদাধিকারী মনোনয়ন নিয়ে আগে ভোটাভুটির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে তা তৈরি হল কালনা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থায়। তার জেরে নিয়ম ঘাঁটতে গিয়ে দেখা গেল, এত দিন সংস্থা চলছিল রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই। এ সবের মাঝে পড়ে আপাতত কমিটি গঠনই ভেস্তে গেল এই সংস্থায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩০
Share: Save:

সংস্থা চলছে প্রায় ৬৪ বছর ধরে। কমিটি তৈরি বা পদাধিকারী মনোনয়ন নিয়ে আগে ভোটাভুটির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে তা তৈরি হল কালনা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থায়। তার জেরে নিয়ম ঘাঁটতে গিয়ে দেখা গেল, এত দিন সংস্থা চলছিল রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই। এ সবের মাঝে পড়ে আপাতত কমিটি গঠনই ভেস্তে গেল এই সংস্থায়।

এই ক্রীড়া সংস্থায় তিন বছর ছাড়া কমিটি গঠন হয়। সভাপতি পদে রাখা হয় মহকুমাশাসককে। বাকি পদাধিকারীরা মনোনীত হন। সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, কমিটি গঠনের আগে একটি ক্লাব প্রতিনিধির ভোট হয়। মাসখানেক আগে সংস্থা অনুমদিত ২৫টি ক্লাবের মধ্যে নির্বাচিত ৯টি ক্লাবের এক জন করে সদস্য সংস্থার কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। তার পরেই বৈঠক ডেকে পদাধিকারী বাছার সিদ্ধান্ত হয়। তাঁরা মনোনীত না হলে ভোট হবে বলে ঠিক হয়। ভোটদানের অধিকার রয়েছে মহকুমার বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, ব্লক ও পুর ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি, ক্লাব প্রতিনিধি প্রমুখের। এ বার সে জন্য ৬৪ জনের তালিকা তৈরি হয়।

রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ শহরের মহারাজা স্কুলে বসে এই সভা। তবে তার আগে স্কুলের কাছাকাছি মনসাতলায় জড়ো হন তৃণমূলের এক পক্ষের লোকজন। তাঁরা প্রায় সকলেই জেলার এক মন্ত্রীর অনুগামী বলে পরিচিত। সেখানে ছিলেন পূর্বস্থলীর (উত্তর) বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। কালনার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু ও তাঁর অনুগামীরা আবার স্কুল চত্বরে জড়ো হন। সভার শুরুতে নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ জন ‘ক্রীড়া অনুরাগী’ বাছা হয়, যাঁদের ভোটদানের ক্ষমতা থাকে। এই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দু’টি গোষ্ঠী আলাদা তালিকা জমা দেয়। দু’টি গোষ্ঠী সম্পাদক-সহ গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী এই তালিকা থেকে নির্বাচনের দাবি জানায়।

সভা শুরু হতেই ক্রীড়া সংস্থা জানায়, যে ৯টি ক্লাব নির্বাচিত হয়েছে, তারা দু’টি করে ভোট দিতে পারবে। এই নিয়মে আপত্তি তোলেন তপনবাবুরা। কিন্তু সংস্থা জানায়, এমনটাই তাদের নিয়ম। শুরু হয় তর্কাতর্কি। সভাস্থলে সংস্থার নিয়মকানুন খতিয়ে দেখার দাবি ওঠে। তা দেখতে গিয়েই দেখা যায়, সংস্থার কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। তাই সংস্থার নিয়মকানুন বৈধ নয়। আগে বৈধ নিয়ম তৈরি করে তার পরে কমিটি গঠনের দাবি ওঠে। বন্ধ করে দেওয়া হয় সভা।

যে সংস্থার সভাপতি রাখা হয়েছে মহকুমাশাসককে, সেটির রেজিস্ট্রেশন নেই কেন? সংস্থার সম্পাদক অমরেন্দ্রনাথ সরকার দাবি করেন, ২০০৫ সাল থেকে বারবার চেষ্টা করেও সংস্থার রেজিস্ট্রেশন করাতে পারেননি। তাঁদের বারবার বলা হয়েছে, মহকুমাশাসক যে সংস্থার সভাপতি, এ ব্যাপারে সরকারি নির্দেশিকা আনতে হবে। অমেরন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমাদের পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব হয়নি।” তিনি জানান, এই পরিস্থিতি মহকুমাশাসককে জানানো হবে। তিনি যা নির্দেশ দেবেন সেই ভাবে চলা হবে। মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ জানান, ওঁরা আগে লিখিত ভাবে পুরো বিষয়টি জানান। তার পরে খতিয়ে দেখা হবে।

কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “অন্য কোনও পক্ষ সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না। আমরা ক্রীড়া অনুরাগী হিসেবে যাঁদের নামের তালিকা দিয়েছি, তাঁরা খেলাধুলোর সঙ্গেই যুক্ত।” পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপনবাবু বলেন, “এই সংস্থায় নানা কাজ হয়েছে, যা নিয়ম বহির্ভূত। সংস্থা আগে আইন মেনে চলুক, পরে কমিটি গড়ার কথা ভাবা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kalna tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE