E-Paper

পানীয় জল মিলছে কম, ক্ষোভ বহু ওয়ার্ডে

শহরের বাসিন্দাদের দাবি, ভাগীরথীর জল যে সময়ে বিলি করা হয় তখন জলের গতি ভাল থাকে। পাম্পের জল দেওয়া হলেই কমে যাচ্ছে গতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ০৮:৪৪
জল মিলছে কম। কালনার ২ নম্বর ওয়ার্ডে।

জল মিলছে কম। কালনার ২ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র।

পুরসভার দেওয়া পানীয় জলের জোগান কমেছে কালনা শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে। ভুক্তভোগীদের দাবি, কল থেকে সরু হয়ে জল পড়ছে। ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জলই ধরা যাচ্ছে না। এই গরমে দ্রুত জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

কালনা শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বাস। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, বাজার, আদালত, চিকিৎসা পরিষেবার মতো নানা প্রয়োজনে আরও কয়েক হাজার মানুষ শহরে যাতায়াত করেন। পুরসভার তরফে প্রতিদিন তিন বেলা সাত ঘণ্টা জল দেওয়া হয়। সকাল ৬টা থেকে ১০টা, বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টো বিকেল সাড়ে ৪টে তেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জল আসে। একটি পাইপ লাইনের মাধ্যমেই দু’ভাবে পরিষেবা দেওয়া হয়। ভাগীরথীর জলকে দূষণমুক্ত করে বিলি করা হয় তিন ঘণ্টা। বাকি চার ঘণ্টা মাটির তলা থেকে পাম্পের মাধ্যমে তোলা জল বিলি করা হয়। মাটির তলা থেকে জল তোলার জন্য রয়েছে পুরসভার ২৭টি পাম্প।

শহরের বাসিন্দাদের দাবি, ভাগীরথীর জল যে সময়ে বিলি করা হয় তখন জলের গতি ভাল থাকে। পাম্পের জল দেওয়া হলেই কমে যাচ্ছে গতি। সমস্যা বেশি নিচু এলাকাগুলিতে। ১, ২, ৫, ৮, ১০, ১৩, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জলের গতি অনেকটাই কম বলে জানা গিয়েছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি অংশে জল না পৌঁছনোয় পুরসভার তরফে দু’টি জলের গাড়ি পাঠানো হচ্ছে নিয়মিত। সেখান থেকে প্রায় ৪০ ঘর বাসিন্দা পানীয় জল সংগ্রহ করছেন।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিপুল দত্ত বলেন, ‘‘গ্রীষ্মে জলের প্রয়োজন বেশি। অথচ অত্যন্ত ধীর গতিতে পুরসভার কল দিয়ে জল আসছে। যে কোনও পাত্র ভরতে লাগছে দীর্ঘ সময়। একটু উঁচুতে ট্যাঙ্ক হলে আর জল পৌঁছচ্ছে না।’’ রমা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বাসিন্দাও বলেন, ‘‘জলের গতি ক্রমশ কমছে। পুরসভার বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।’’ তৃণমূলের এক পুরসদস্যের কথায়, ‘‘নানা জায়গায় সৌন্দর্য্যায়ন করতে পুরসভার অনেক খরচ। অথচ জলের গতি বাড়ানোর ব্যাপারে পুরসভা উদাসীন। এখন থেকে বিষয়টি না ভাবলে আগামী দিনে এটি বড় সমস্যা হতে পারে।’’ তাঁর প্রস্তাব, কাঁসারিপাড়া এবং ঠাকুরপাড়া এলাকায় পুরসভার দু’টি জলাধার পড়ে রয়েছে। জলের গতি বাড়াতে পুরসভা সেগুলি ব্যবহার করতে পারে।

পুরসভার দাবি, দীর্ঘদিন ভারী বৃষ্টি নেই। জলস্তর অনেকটাই নেমে গিয়েছে। ফলে পাম্পগুলি থেকে তোলা জলের পরিমাণ কমেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণেও মাটির তলার তুলতে সমস্যা হচ্ছে। উপ-পুরপ্রধান তপন পোড়েল বলেন, ‘‘একটি পরিবারের যে পরিমাণ পানীয় জলের প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত পৌঁছচ্ছে। তবে জল অপচয় করছেন নাগরিকদের একটা বড় অংশ। তাঁরা কলের মুখ খুলে রাখছেন। পরিস্রুত জলে যানবাহন ধোয়া, গরুকে স্নান করানোর মতো কাজও করছেন অনেকে।’’ তিনি জানান, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে অমৃত ২ প্রকল্পে ভাগীরথীর জলকে দূষণ মুক্ত করে বিলি করার জন্য আর একটি প্রকল্প গড়তে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। এই প্রকল্পের জন্য জলশোধন প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে একচাকা এলাকায় পুরসভার কেনা সাড়ে তিন বিঘা জমিতে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalna Drinking Water Crisis

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy