রেশনে নিম্ন মানের চাল দেওয়ার অভিযোগে শো-কজ করা হয়েছে এক রেশন ডিলারকে। সঙ্গে তিন দিনের মধ্যে এই নিম্নমানের চাল তিনি কোথা থেকে পেলেন ও কেন গ্রাহকদের দিলেন, তাও জানাতে বলা হয়েছে। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শো-কজের উত্তর সন্তোষজনক না হলে ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। ওই দিন দুপুরে জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাত্র বর্ধমান ১ ব্লকের রেশন দোকানগুলি পরিদর্শনে বের হন। শহর লাগোয়া খাঁ পুকুরের একটি রেশন দোকানের লাইনে ক্রেতা সেজে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল, রমজান মাস উপলক্ষে রেশনে যে ছোলা, ময়দা ও চিনি দেওয়া হয়েছে, তা মানুষ কতটা নিচ্ছেন, রেশন দোকানদার তাঁদের কাছ থেকে কি দাম নিচ্ছেনতা পরখ করা। কারণ, কিছুদিন আগেই রাজ্য এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল যে ক্রেতা অনুপাতে সরবরাহ করা জিনিসপত্রের পরিমান কম। তবে রাজ্য খাদ্য দফতরের নীতি মেনে রেশনে কোনও সময়েই পুরো সামগ্রী সরবরাহ করা হয় না। যুক্তি হল সব ক্রেতা সব জিনিস নেন না। তাই শতকরা ১০০ ভাগ খাদ্য বস্তু সরবরাহ করার দরকার নেই। ওই কারণেই যে ছোলা, ময়দা ও চিনি কম দেওয়া হয়েছিল তা কবুল করে সাধনবাবু বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত য ছোলা, ময়দা, চিনি মজুত থাকবে, ততক্ষণই ক্রেতাদের তা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ডিলারদের।” ডিলারেরা অবশ্য দাবি করেযন, রমজান মাসে দেওয়া ওই অতিরিক্ত জিনিস ক্রেতারা সবাই নেবেন। সাধনবাবু সেই পরিস্থিতি দেখতেই বেরিয়েছিলেন ওই দিন।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে সাধনবাবু দেখেন, একটি বস্তা থেকে নিম্নমানের চাল দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। তৎক্ষণাৎ ওই দোকানে ঢুকে রেশন ডিলার দেবচরণ সরকারকে বস্তাটি সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেন তিনি। তারপরে ওই চালের নমুনা সংগ্রহ করে, পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে বলেন বর্ধমান ১ ব্লকের খাদ্য ইন্সপেক্টার বিপুল মিত্রকে।
সোমবার বিপুলবাবু যে রিপোর্ট খাদ্য নিয়ামকের কাছে পেশ করেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে, ডিস্ট্রিবিউটর যে চাল সরবরাহ করেছিলেন তার কোনও নমুনা রাখেননি ওই ডিলার। ফলে ওই চাল সরবরাহের সময়েই নিম্ন মানের ছিল না কি পরে তা বদলে নিম্ন মানের চাল রাখা হয়েছে তা প্রমাণ করা যাচ্ছে না। সাধনবাবু বলেন, “নমুনা না রাখায় ওই ডিলারকে শো-কজ করা হয়েছে। তাঁকে জবাব দিতে হবে কেন তিনি সরবরাহ করা চালের নমুনা রাখেননি। তিন দিনের মধ্যে দেওয়া জবাব সন্তোষজনক না হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” খাদ্য নিয়ামক আরও জানান, ডিস্ট্রিবিউটরেরা ডিলারদের বা ডিলারেরা যাতে গ্রাহকদের কোনও নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্য না দেন সে দিকে নজর দিতে প্রতিদিনই পরিদর্শক দল নানা রেশন দোকানে গিয়ে গোপনে নজরদারি করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy