Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

প্রশ্ন ভোটারের, জবাব দিতে ফেসবুকে প্রার্থী

মাসখানেক আগেও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল রাখতে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক। এই সাইটকে কাজে লাগিয়ে ভোট প্রচারেও নেমে পড়েছেন তিনি। ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছেন এর মাধ্যমেই। শুধু তিনি নন, ফেসবুকে জনসংযোগ শুরু করেছেন জেলার অন্য কয়েক জন সিপিএম নেতাও।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০০:২৭
Share: Save:

মাসখানেক আগেও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল রাখতে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক। এই সাইটকে কাজে লাগিয়ে ভোট প্রচারেও নেমে পড়েছেন তিনি। ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছেন এর মাধ্যমেই। শুধু তিনি নন, ফেসবুকে জনসংযোগ শুরু করেছেন জেলার অন্য কয়েক জন সিপিএম নেতাও।

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে গত বারের জয়ী সিপিএমের সাইদুল হককে ফের প্রার্থী করেছে বামফ্রন্ট। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক ছিল না তাঁর। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচারে গিয়ে দলের নেতারা সব জায়গায় প্রার্থীর ফেসবুক পেজের কথা জানাচ্ছেন। আবেদন করছেন, কারও কোনও প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় প্রার্থীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিন। সাইদুল হক জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে ভোটের আগে পর্যন্ত প্রতি রাতে ১০টা থেকে ১১টা তিনি বরাদ্দ রেখেছেন মানুষের নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য। প্রথম রাতে ১৪ জন প্রশ্ন করেছেন। তবে সকলেই প্রশ্ন পাঠিয়েছেন মেসেজ ইনবক্সে। সাইদুল হক বলেন, “সাংসদ তহবিলের ব্যবহার থেকে শুরু করে জেলা ভাগ, অন্ডাল বিমাননগরীর মতো নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন এসেছে প্রথম দিন। আমি সাধ্য মতো উত্তর দিয়েছি।” তিনি জানান, খুব বেশি দিন অ্যাকাউন্ট না খুললেও এরই মধ্যে ভাল সাড়া পেয়েছেন। তাঁর কথায়, “তরুণ প্রজন্মের একটা অংশের কাছে পৌঁছনো সত্যিই কঠিন। বাড়িতে গেলে পাওয়া যায় না। আবার কলেজে গেলেও যে দেখা মিলবে, সে নিশ্চয়তা নেই। অনেক ভোটার বাইরে চাকরি করেন। ফেসবুক সে সবের ক্ষেত্রে ভাল মাধ্যম।” আসানসোল কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী বংশগোপাল চৌধুরীর অবশ্য ফেসবুকে নিজস্ব কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। তবে তাঁর সমর্থনে একটি পেজ রয়েছে, ‘ভোট ফর কমরেড বংশগোপাল চৌধুরী’। ৫ মার্চ সেটি খোলা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছ’শো লাইক পেয়েছে পেজটি।

শুধু প্রার্থীরা নয়, সিপিএমের তরফে দলীয় ভাবেও একাধিক অ্যকাউন্ট খোলা হয়েছে ফেসবুকে। গত ১৮ মার্চ আলিমুদ্দিনে দলের রাজ্য কমিটির তরফে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও টুইটার হ্যান্ডলের সূচনার পরপরই ২০ মার্চ খোলা হয়েছে ‘সিপিএম বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট কমিটি’। এখনও পর্যন্ত প্রায় সাতশো জন তা লাইক করেছেন। অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে টুইটারেও। ১৪ ফেব্রুয়ারি জামুড়িয়া-অজয় জোনাল কমিটির পক্ষ থেকেও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ফেসবুকে। ফেসবুক থেকে দেখা গিয়েছে, নেতাদের মধ্যে সব থেকে পুরনো অ্যকাউন্ট বিধাননগর-জেমুয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারের। তিনি বলেন, “প্রচলিত মাধ্যমের পাশাপাশি মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংও খুব কার্যকরি।” খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দলের অন্য নেতাদের মধ্যে আসানসোল জোনাল কমিটির সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায়, দুর্গাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী অ্যাকাউন্ট খুলেছেন ২০১১ সালে। তুলনায় দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অ্যাকাউন্টটি পুরনো। ২০১০ সালের এপ্রিলে চালু হয়েছে সেটি। বুধবারই দুর্গাপুর ১ জোনাল কমিটির ফেসবুক পেজের উদ্বোধন করে অমলবাবু। তিনি বলেন, “এই মাধ্যমকে ব্যবহারের সার্বিক উদ্যোগ হয়েছে দলে। সাইদুল ইতিমধ্যে জনসংযোগ শুরু করেছে। কয়েক দিনের মধ্যে আমিও তা শুরু করব।”

বর্তমানে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অন্যতম বড় মাধ্যম বলে মনে করেন তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর নিজেরও ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তবে সিপিএম প্রার্থী মানুষের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ফেসবুক বেছে নিয়েছেন শুনে তাঁর মন্তব্য, “মানুষ দেখছেন কে বা কারা তাঁদের পাশে আছেন। ফেসবুক নয়, ইভিএম-ই শেষ কথা বলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE