ভরসন্ধ্যায় রিভলবার দেখিয়ে সোনার দোকানে ডাকাতির দু’দিন পেরোতে না পেরোতেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ফের ছিনতাই হল শহরে।
বুধবার কাটোয়ার সার্কাস ময়দানের পাশের গলিতে ঘটনাটি ঘটে। সুখেন্দুবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মীর অভিযোগ, আচমকা মোটরবাইকে এসে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় এক যুবক। বিকেলেই কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
এ ঘটনার পরে ফের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশ্ন উঠছে পুলিশের সক্রিয়তা নিয়েও। ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের মতে, সার্কাস ময়দান-কাছাড়ি রোড এলাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র। সেখানে পরপর ছিনতাইয়ের ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পুজোর মুখে এ ধরণের বারবার ঘটলে ব্যবসা লাটে উঠবে বলেও তাদের অভিযোগ। সোমবারই কাছাড়ি রোডের এক গয়নার দোকানে কর্মীদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে লুঠপাট চালায় একদল দুষ্কৃতী। বোমাবাজিও করে। বোমার টুকরো লেগে আহত হন তিন জন। নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার ব্যবসা বন্ধ রাখেন শহরের ব্যবসায়ীরা। পুলিশ টহল বাড়ানোর দাবিও করেন। কাটোয়া থানার ওসি পীযূষ লায়েককেও বদল করা হয়। আজ, বৃহস্পতিবার ওসি পদে যোগ দেবেন ভাতারের ওসি জুলফিকার আলি। তার মধ্যেই একটা ডাকাতির কিনারা হওয়ার আগে আরও একটা ছিনতাই হয়ে গেল শহরে।
সুখেন্দুবিকাশবাবুর বাড়ি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঠিক পিছনে। এ দিন ওই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেই বইয়ের দোকানের পাশের গলি দিয়ে সার্কাস ময়দানের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, “বাড়ির কাছে চলে এসেছিলাম। হঠাৎই একটানে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এক দুষ্কৃতী। চোর চোর বলে চিৎকার করতেই আমার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। তবুও পিছু নিই। তখনই আমার সামনে বাইক নিয়ে এসে দাঁড়ায় এক জন। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করে। তারপরে ওই দুষ্কৃতীকে তুলে স্টেশনের দিকে চলে যায়।” তিনি বলেন, “আমাদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের টেঁয়া গ্রামে। সেখানে ৯৭ বছরের বৃদ্ধা মা আর আমার ভাইপো অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছে। তাঁদের চিকিৎসার জন্যই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছিলাম।” পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ৫১ হাজার টাকা খোওয়া গিয়েছে।
একের পর এক এ ধরণের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক-বিরোধী সব পক্ষই। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ ঘটনার পর ধরে নেওয়া যায়, পুলিশ নিস্ক্রিয়। ফলে দুষ্কৃতীরা অবাধে শহরের ভিতর ঘুরছে।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলার সহ-সভাপতি কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় মনে করেন, পুলিশ ইচ্ছা করলেই এ ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা আটকাতে পারে। কাটোয়ার প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “শহরে পুলিশ বলে কিছু নেই বলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।” বর্ধমান জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য এ সব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, “আমরা কয়েকদিনের মধ্যেই ডাকাতির ঘটনা কিনারা করে ফেলব।” শহরে পুলিশের টহল বাড়ানো হচ্ছে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy