Advertisement
E-Paper

ফলন বহু, আলু হিমঘরে ঠাঁই পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা

বিপুল উত্‌পাদন হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন আলুচাষিরা। তাঁদের দাবি, মাঠে এখনও ৪০ শতাংশ আলু পড়ে, তার মধ্যেই হিমঘরে ঠাঁই নাই দশা। কৃষি কর্তাদেরও আশঙ্কা, এ বার উত্‌পাদন যত হয়েছে তাতে জেলার সমস্ত হিমঘর মিলিয়েও কয়েক লক্ষ মেট্রিক টন আলু রাখার জায়গা হবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০১:৫২
বর্ধমানে গোদার কাছে এক হিমঘরে লাইন পড়েছে আলু ভর্তি ট্রাকের। সোমবার উদিত সিংহের তোলা ছবি।

বর্ধমানে গোদার কাছে এক হিমঘরে লাইন পড়েছে আলু ভর্তি ট্রাকের। সোমবার উদিত সিংহের তোলা ছবি।

বিপুল উত্‌পাদন হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন আলুচাষিরা। তাঁদের দাবি, মাঠে এখনও ৪০ শতাংশ আলু পড়ে, তার মধ্যেই হিমঘরে ঠাঁই নাই দশা। কৃষি কর্তাদেরও আশঙ্কা, এ বার উত্‌পাদন যত হয়েছে তাতে জেলার সমস্ত হিমঘর মিলিয়েও কয়েক লক্ষ মেট্রিক টন আলু রাখার জায়গা হবে না।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বার যেখানে জেলার ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল, এ বার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ হাজার হেক্টরে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় প্রতি হেক্টরে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন আলু উত্‌পাদিত হয়েছে বলেও ধরে নেওয়া হচ্ছে। যদিও এখনও প্রায় ৪০ শতাংশ আলু মাঠে পড়ে রয়েছে। ফলে আলুর ফলন কার্যত কত হবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কৃষি কর্তারা। এ দিকে কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এ বছর নতুন খোলা দুটি হিমঘর-সহ মোট ১১৭টি হিমঘর চালু রয়েছে। ৭৭ হাজার হেক্টরে ৩০ মেট্রিক টন করে আলু উত্‌পন্ন হবে ধরে নিলে জেলায় প্রায় ২৩ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উত্‌পন্ন হবে। ফলে এই বিপুল পরিমাণ আলুর একটা বড় অংশ যে হিমঘরের বাইরে থেকে যাবে তাতে নিয়ে সন্দেহ নেই চাষি ও কৃষি কর্তাদের।

বিপদ আঁচ করে চাষিরা ইতিমধ্যেই ট্রাক্টর বা ট্রলিতে আলু নিয়ে ভিড় করছেন নানা হিমঘরে। রাস্তাঘাটও তার জেরে অবরুদ্ধ। রবিবারই বর্ধমান-বোলপুর রোডে গুসকরায় এক হিমঘর শ্রমিকের অভাবে আলু নিতে দেরি করায় চাষিরা পথ অবরোধ করেন। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে রাতে অবরোধ ওঠে। শুধু তাই নয় নানা ব্লকেও হিমঘরে ঠাঁই না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন চাষিরা।

সম্প্রতি আলুচাষি কল্যাণ মঞ্চের তরফে জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি দাবিপত্র পাঠানো হয়। সেখানে আলুর সহায়ক মূল্য অন্তত আট টাকা কিলো করার দাবি জানান চাষিরা। তাঁদের আরও দাবি, রাজ্যে ৮,০২,৫০০ একর জমিতে ১০ লক্ষেরও বেশি কৃষিক পরিবার প্রায় ৯০ লক্ষ ৭২ হাজার মেট্রিক টন আলু উত্‌পাদন করেন। দাম না পেলে সর্বনাশ হবে তাঁদের।

জেলা কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের খবর, জেলায় যে ১১৭টি হিমঘর রয়েছে তার ১০২টি শুধু আলু মজুত করে, ১১টি মাল্টিপারপাস হিমঘর ও বাকি ৪টি আলু সহ অন্য সব্জি রাখা হয়। ফলে ১১৭টি হিমঘরে মোট ১৪.২৭ লক্ষ মেট্রিক টন আলু রাখা সম্ভব। এর শতকরা ৯০ ভাগ চাষিদের আলুর জন্য সংরক্ষিত। অর্থাত্‌ হিমঘরে প্রায় ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত রাখতে পারবেন চাষিরা। ফলে আরও ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু হিমঘরে ঠাঁই পাবে না বলেই আশঙ্কা কর্তাদের। ওই দফতরের সহ কৃষি অধিকর্তা সন্দীপ দাস বলেন, “রাজ্যে সরকার যে ১০ কোটি টাকা ভর্তুকি ঘোষনা করেছেন, সে বাবদ কোনও চিঠি সোমবার পর্যন্ত আমাদের হাতে আসেনি। তবে হিমঘরগুলিতে যাতে আলু রাখা নিয়ে গোলমাল না হয় জন্য আমরা সরকরি স্তরে তদারকি করছি। সরকারি নিয়ম মেনে প্রতিটি হিমঘরে চাষিরা যাতে শতকরা ৯০ ভাগ জায়গায় আলু রাখতে পারেন তাও দেখা হচ্ছে।” এই বাকি ১০ ভাগ জায়গায় অর্ধেক সরকার ও অর্ধেক আলু রাখতে পারে জেলা প্রশাসন। ২৫ মার্চের মধ্যে সরকারি ও জেলা প্রশাসনকে তারা ওই জায়গা নেবেন কি না তা জানাতে হবে হিমঘরকে।

potato burdwan cold storage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy