দুর্গাপুর মহকুমা আদালত চত্বরে আইনজীবীদের সেই মিছিল।—নিজস্ব চিত্র
আগের দিন তাঁরা বাইরে থেকে এজলাসের দরজা বন্ধ করে বিচারকদের আটকে রেখেছিলেন। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের এক বিচারকের বদলির দাবিতে শনিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করলেন দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবীরা। বার কাউন্সিল সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
বিচারকের বদলি চেয়ে আদালত স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, এমন নজির প্রবীণ বিচারপতি বা আইনজীবীদের কেউই প্রায় মনে করতে পারছেন না। কলকাতা হাইকোর্টের অসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, বিচারকদের সঙ্গে এই আচরণ সরাসরি আদালত অবমাননার সামিল। এতে জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে নালিশ জানানো উচিত। কিন্তু তাতে নিরস্ত হওয়ার বদলে বার কাউন্সিলও বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এ দিন সকালে বর্ধমান জেলা জজ পবনকুমার মণ্ডল আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও তাঁরা দাবি থেকে সরতে রাজি হননি।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বিকেলে। সে দিন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বধূ নির্যাতনের একটি মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী কল্লোল ঘোষ অভিযোগ করেন, শুনানি চলাকালীনই বিচারক আশুতোষ সরকার এজলাস ছেড়ে উঠে যান। তখনও বিকেল ৫টা বাজেনি। কিন্তু শুনানি শেষ করার অনুরোধ বিচারক কানে তোলেননি। এই নিয়ে হইচই হওয়ার পরেই কিছু আইনজীবী এজলাসের বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বিচারকে আটক করেন। অন্যান্য এজলাসেও একই ভাবে বিচারকদের ‘বন্দি’ করা হয়। শেষমেশ জেলা জজ বৈঠকের আশ্বাস দিলে ঘণ্টাখানেক পরে বিচারকদের মুক্তি দেওয়া হয়।
শুক্রবার দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কিন্তু এ দিন জেলা জজ এলে আইনজীবীরা দাবি করেন, বিচারক আশুতোষ সরকারকে অন্যত্র বদলি করতে হবে। বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, জেলা জজ সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট উত্তর না দেওয়ায় আইনজীবীরা আবার বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। আইনজীবীদের সঙ্গে আদালতের করণিক এবং অন্য কর্মীরাও কর্মবিরতিতে সামিল হন। বার কাউন্সিলের সভাপতি দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওই বিচারক বারবার আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। ঘটনার দিনও তিনি দুর্ব্যবহার করেছিলেন। অপমান করেছিলেন আইনজীবীদের।” দেবীবাবুর হুমকি, “যত দিন না ওই বিচারক বদলি হচ্ছেন, আন্দোলন চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy