বিক্ষিপ্ত হিংসা, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ থাকলেও চতুর্থ দফার লোকসভা ভোটে মোটের উপর খুশি সিপিএম। এমনকী দলের নেতারা আসানসোলের আসন তাঁদের দখলেই থাকবে বলে মনে করছেন।
দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “যা ভোট হয়েছে তাতে আসানসোলের ফল আমাদের অনুকূলে থাকবে বলে মনে হয়।” তবে তার সঙ্গেই এ দিন ৬৬টি বুথে রিগিং হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
সিপিএমের দাবি, তৃতীয় দফার নির্বাচনে যে ভাবে একতরফা ভোট হয়েছিল তাতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। চতুর্থ দফার ভোটের আগে দলীয় নেতৃত্বের টোটকা ছিল, কমিশনকে জানিয়ে ফল না হলে নিজেরাই মাঠে নেমে প্রতিবাদ করুন। আসানসোলের নির্বাচনে সে ভাবেই পরিকল্পনা ছকেছিল দল। গড়া হয়েছিল বিশেষ বাহিনী। যাঁরা অভিযোগের কিনারা না হলে সাধারণ ভোটারদের পাশে থেকে বুথে এগিয়ে দিয়েছেন। বিরোধীরা রিগিংয়ের চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করেছে বলেও দাবি সিপিএমের। সিপিএমের দাবি, এর সুফল মিলেছে দুর্গাপুর শহর লাগোয়া জেমুয়া, পরানগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায়। দলের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিবাদে তৃণমূলের বাহিনী পালিয়ে গিয়েছে।” তৃণমূল অবশ্য এ ধরণের কোনও বাহিনীর কথা মানতে চায়নি। ওই এলাকায় দলের যুব নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ স্বাধীন ঘোষ বলেন, “সিপিএম বাহিনী দিয়ে ভোট করাতো। আমাদের তা দরকার পড়ে না।”
এ দিন জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জ, টেটিখোলা ও শঙ্করপুরের সাতটি বুথে সিপিএমের কোনও এজেন্ট চোখে পড়েনি। ভোটের দায়িত্বে ছিল রাজ্য পুলিশ। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় রুট মার্চ করলেও রাতে তৃণমূলের বাইকবাহিনী সিপিএম কর্মী সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয় বলে সিপিএমের অভিযোগ। এছাড়া তাদের পোলিং এজেন্ট জগন্নাথ যাদবকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা মারধর করে বলেও সিপিএমের দাবি। রাতে তিনি ভয়ে হাসপাতালে যেতে পারেননি, সকালে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে এলাকার কোনও বুথেই পুননির্বাচনের দাবি জানায় নি সিপিএম। কেন? দলের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজবাবু বলেন, “সন্ত্রাস ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত করতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু তা হয়নি। সবাই দল বেঁধে ভোট দিতে বুথে গিয়েছেন।” জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “কে কাকে ভোট দিয়েছেন সেটা অন্য বিষয়। আমাদের দাবি ছিল, সবাই যেন ভোট দেওয়ার সুযোগ পান। কয়েকটি এলাকা বাদে অধিকাংশ জায়গায় তা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” অমলবাবু আরও বলেন, “জানান, শেষ মুহুর্তে নির্বাচন কমিশনের কিছু নির্দেশও কাজে এসেছে। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষ তৎপরতার সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে গণমাধ্যম ও নির্বাচন কমিশনের সদর্থক ভূমিকা এবং সাধারণ মানুষের ভোটদানের অদম্য মানসিকতা কাজে এসেছে। যা ভোট হয়েছে তাতে ফল আমাদের অনুকূলে থাকবে বলে আমাদের আশা।”
দিনের শেষে মানুষ যে নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছেন এটাই স্বস্তিতে রেখেছে সিপিএমকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy