Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ভর্তিতে কারচুপির নালিশ, পদত্যাগ কলেজের কর্তার

ভর্তির মেধা তালিকায় কারচুপি হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল টিএমসিপি। ওই দিনই সন্ধ্যায় পদত্যাগপত্র জমা দিলেন কালনা কলেজের টিচার-ইন-চার্জ দীপঙ্কর সেনগুপ্ত। তাঁর দাবি, “আমার কাছে যে অভিযোগপত্র জমা পড়ে সেখানে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে অসঙ্গতি, কারচুপির মতো বেশ কিছু শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ৩৬ বছরের কর্মজীবনে এ ধরণের অভিযোগে আমি অসম্মানিত বোধ করছি। তাই এই সিদ্ধান্ত।” ১৯ জুলাই কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই নতুন অধ্যক্ষ বেছে নেওয়া হবে। ততদিন পর্যন্ত অবশ্য তিনিই কাজ চালাবেন বলে জানিয়েছেন দীপঙ্করবাবু।

দীপঙ্কর সেনগুপ্ত। —নিজস্ব চিত্র।

দীপঙ্কর সেনগুপ্ত। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০১:১১
Share: Save:

ভর্তির মেধা তালিকায় কারচুপি হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল টিএমসিপি। ওই দিনই সন্ধ্যায় পদত্যাগপত্র জমা দিলেন কালনা কলেজের টিচার-ইন-চার্জ দীপঙ্কর সেনগুপ্ত।

তাঁর দাবি, “আমার কাছে যে অভিযোগপত্র জমা পড়ে সেখানে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে অসঙ্গতি, কারচুপির মতো বেশ কিছু শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ৩৬ বছরের কর্মজীবনে এ ধরণের অভিযোগে আমি অসম্মানিত বোধ করছি। তাই এই সিদ্ধান্ত।” ১৯ জুলাই কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই নতুন অধ্যক্ষ বেছে নেওয়া হবে। ততদিন পর্যন্ত অবশ্য তিনিই কাজ চালাবেন বলে জানিয়েছেন দীপঙ্করবাবু।

বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ওই কলেজের টিএমসিপির ছাত্র সংসদের একটি প্রতিনিধি দল অধ্যক্ষের কাছে ভর্তি নিয়ে কারচুপির অভিযোগ তুলে অভিযোগপত্র জমা দেয়। তাঁদের দাবি, ২৪ জুন প্রকাশিত হওয়া মেধা তালিকায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে। তাতে ছাত্রছাত্রীরা হতাশ। অধ্যক্ষ অবশ্য জানান, টাইপ করার ভুলে কয়েকজনের নামের পাশে যে নম্বর লেখা হয়েছে তাতে ভুল এসেছে। শীঘ্র নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে। সন্ধ্যার মধ্যেই অনার্সের বিষয়গুলির তালিকা নতুন করে টাঙানো হয় এবং ওয়েবসাইটেও তালিক বদলানো হয় বলে জানান দীপঙ্করবাবু। তবে অধ্যক্ষের যুক্তি মানতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর মাহাতোর বক্তব্য ছিল, “ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সাংসদকে অন্ধকারে রেখেছিল। প্রথম মেধা তালিকায় বেশ কিছু গণ্ডগোলও ছিল।” টিএমসিপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক পলাশ মণ্ডল কালনা ২ ব্লকের বাসিন্দা। তিনি বলেন, কালনা কলেজেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগ করার কথা শুনেছি। সংগঠন কখনও চায় না যে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অধ্যক্ষের দূরত্ব তৈরি হোক। সাংগঠনিক ভাবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর রায়ের দাবি, “যে কোনও সংগঠনই কলেজের কোনও বিষয় নিয়ে তদন্ত চাইতে পারে। বাইরে থাকায় ঠিক কী ঘটেছে জানিনা। তবে বহু কলেজেই ভর্তি নিয়ে তৃণমূল দাদাগিরি চালাচ্ছে। অবাক হয়ে যাচ্ছি যে যারা অজস্র দুর্নীতিতে জড়িত তারাই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ করছে।”

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক ধরেই এই কলেজে অধ্যক্ষের পদটি শূন্য। অভিজ্ঞ অধ্যাপকেরাই এতদিন কাজ চালাচ্ছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান দীপঙ্করবাবু। ভর্তির প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই কড়া মনোভাব ছিল তাঁর। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম বিলি ও জমা নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত ছাত্র সংসদের মনঃপূত হয়নি বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। কারণ ক্যাম্পাস থেকে ফর্ম বিলি করা হলে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ থাকে। সে সময় কলেজে বিক্ষোভও দেখায় তারা। তাছাড়া সংসদ থেকে সমস্ত আবেদনকারীর নাম মেধা তালিকায় প্রকাশ করার দাবিও তোলা হয়েছিল। সেটাও মানা হয়নি।তবে শুক্রবার সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ ঘোষ বলেন, “বিষয়টিতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত জড়িত। আমরা কারচুপির প্রমাণ পেয়েছি বলেই কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

কালনার বিধায়ক ও কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “ওই অধ্যক্ষ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কলেজের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনওদিন দুর্নীতির কোনও অভিযোগ ওঠেনি। আমরা তাঁকে পদত্যাগ প্রত্যাহারের কথা বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE