পুজোর মুখে সুখবর ইসিএলে। রুগ্ণ দশা কাটিয়ে বিআইএফআর থেকে মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে, সোমবার এমনটাই জানালেন রাষ্ট্রায়ত্ত এই কয়লা উত্তোলক সংস্থা কর্তৃপক্ষ। কয়লা খনি রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পরে এই প্রথম ইসিএল বিআইএফআর থেকে মুক্ত হচ্ছে বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে। এই খবর আসার পরে খুশির হাওয়া খনিকর্মীদের মধ্যে।
১৯৭৩ সালে খনি রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয়। তার পরে ৪১ বছর ধরে কয়লা তুললেও লাভের মুখ তেমন দেখেনি ইসিএল। সম্পত্তির তুলনায় দায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। অলাভজনক এই সংস্থা এক সময়ে কয়লা মন্ত্রকের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। আধুনিক প্রযুক্তিতে কয়লা উত্তোলন-সহ নানা পদ্ধতিতে ব্যয় সঙ্কোচনের পন্থা নেওয়া হয়। তার ফলে ২০০৯-১০ থেকে সংস্থা লাভের মুখ দেখতে শুরু করে। ২০০৮ সালে সংস্থার আর্থিক দায় ছিল আট হাজার কোটি টাকা। লাভের পথে চলতে শুরু করার পর থেকে দায় কমতে থাকে।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “সোমবার শুনানিতে বিআইএফআর কর্তৃপক্ষ আমাদের যাবতীয় কাগজপত্র দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের তরফে আমরা সবুজ সঙ্কেত পেয়েছি। আমরা বিআইএফআর মুক্ত হয়েছি।” নীলাদ্রিবাবু জানান, কিছু পদ্ধতিগত কাজকর্ম বাকি রয়েছে। তা শেষ করার পরেই কোল ইন্ডিয়ার তরফে ইসিএলের বিআইএফআর থেকে মুক্তির কথা জানানো হবে। ওই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯-১০ অর্থবর্ষে ৩৩ কোটি, ২০১০-১১ বর্ষে ১০৭ কোটি, ২০১১-১২ বর্ষে ৯৬২ কোটি, ২০১২-১৩ সালে ১৬৫৫ কোটি এবং ২০১৩-১৪ বর্ষে ১২৯৯ কোটি টাকা লাভ করেছে সংস্থা। শুধু তাই নয়, কয়লা উত্তোলন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে আগেকার সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। একাধিক ভূগর্ভস্থ ও খোলামুখ খনিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়লা তোলা হচ্ছে। কর্মী সংকোচনও হয়েছে। খনি রাষ্ট্রায়ত্তকরণের সময়ে এই সংস্থা কর্মী ছিল প্রায় এক লক্ষ ২৫ হাজার। বর্তমানে কর্মী প্রায় ৭২ হাজার। বর্তমানে এই সংস্থার ১৪টি এরিয়ায় মোট ১০৩টি খনি রয়েছে। বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়া হয়েছে আরও ৬টি খনি।
ইসিএলের এই সাফল্যে খুশি শ্রমিক-কর্মীরা। আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শ্রমিক-কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সংস্থাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন।” সিটু নেতা তথা আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরীও বলেন, “ইসিএলের হতাশা কাটল। শ্রমিক-কর্মীদের চেষ্টাতেই এই সাফল্য।” আইএনটিটিইউসি নেতা হরেরাম সিংহ বলেন, “পুজোর মুখে এই খবরে সবাই খুশি।” ইসিএলের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দামোদর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “শুধু সংস্থার শ্রমিক-কর্মীরা নন, এর ফলে লাভবান হবে এই শিল্পাঞ্চলের অর্থনীতি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy