কৈচরে গাড়ি চালকের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন তপনবাবু। নিজস্ব চিত্র।
বোলপুর লোকসভায় লড়াইটা আসলে অস্তিত্বরক্ষার, এমনটাই মনে করেন ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী তপনকুমার সাহা। রবিবার মঙ্গলকোটের কৈচরে প্রচারে এসে তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে বোলপুর লোকসভার বেশিরভাগ গ্রামের মানুষ হাত চিহ্নটাই দেখেননি। তাঁদের প্রতীক দেখানোর পরে ভোট চাইতে হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই লড়াইটা অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বোলপুর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় কার্যত কংগ্রেসের কোনও সংগঠন নেই। হাতেগোনা দু’একটি পঞ্চায়েত ছাড়া কংগ্রেস কোথাও ক্ষমতাতেও নেই। বোলপুর লোকসভার মধ্যে বর্ধমানের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা রয়েছে। রবিবার দুপুরে মঙ্গলকোটে প্রচারে এসে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে পরিচিত হন তিনি। ওই কর্মিসভায় শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান দীপক মজুমদারও ছিলেন। তিনিও বলেন, “দল সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় কে প্রার্থী হয়েছেন সে দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখার দরকার নেই। নিজেদের বাঁচার জন্য এগিয়ে যেতে হবে। অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য লড়তে হবে।” তপনবাবু আবার মঙ্গলকোটের মাজিগ্রামের জামাই। সে কথা উল্লেখ করে জেলা কংগ্রেসের এক নেতা জগদীশ দত্ত বলেন, “জামাইয়ের মান রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।”
তপনবাবু এ দিন কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “কেতুগ্রাম, নানুর, মঙ্গলকোটে তৃণমূলের সন্ত্রাস, তোলাবাজি নিয়ে মানুষ বীতশ্রদ্ধ। সিপিএমের সাংসদও এই এলাকায় কোনও উন্নয়ন করেননি। এ সব মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।” যে সব জায়গায় দলের কর্মী রয়েছেন, সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া যে সব এলাকায় দেওয়াল লিখন করা হয়নি, সেই সব এলাকায় দেওয়াল লেখা শেষ করার জন্যও কর্মীদের অনুরোধ করেন। এ দিন মঙ্গলকোটের ব্লক নেতৃত্বের হাতে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন তুলে দেন তপনবাবু। কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি দীনবন্ধু পাল বলেন, “প্রার্থীর সামনে আমাদের প্রচার কমিটির সভাপতি করা হয়েছে জগদীশ দত্তকে। তিনিই প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কবে কবে প্রচার করা হবে তার দিন ঠিক করবেন।”
কর্মিসভা শুরুর আগে কৈচরে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে পদযাত্রা করেন তপনবাবু। কর্মিসভা শেষে পথচলতি মানুষ থেকে শুরু করে বালির গাড়ি থামিয়ে চালকের সঙ্গেও হাত মেলান। মোটরবাইক চালকদের আটকেও কথা বলেন। তপনবাবুর প্রচারের ধরন দেখে হকচকিয়ে যান মোটরবাইক আরোহী থেকে বালির গাড়ির চালক সকলেই। মাথরুন থেকে কৈচরে বালি নিয়ে আসছিলেন শম্ভুনাথ সাহা। কৈচরে ঢোকার মুখে বালির গাড়ি আটকে তপনবাবু চালকে সঙ্গে হাত মেলান। শম্ভুনাথবাবু বলেন, “আমি তো বুঝতেই পারিনি উনি হাত বাড়িয়ে ছিলেন আমার দিকে। কী করব, বুঝতে পারছিলাম না। অনেকক্ষণ পরে হাত মেলাই।”
তবে তৃণমূল অবশ্য কংগ্রেসের এ হেন প্রচারকে কোনও পাত্তা দিতে রাজি নয়। দলের মঙ্গলকোট ব্লকের সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর দাবি, “অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য কংগ্রেস গিমিকের রাজনীতি করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy