লোকজনের আনাগোনা হয় মাত্র দু’টি দিনেকবির জন্মদিন ২৪ মে ও প্রয়াণ দিবস ২৯ অগস্টে। কিন্তু কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় বাকি সারা বছর কোনও কর্মসূচি নেই। কবির ৩৮তম প্রয়াণ দিবসের আগের দিন এ নিয়ে আক্ষেপ ঝরে পড়ে তাঁর ভাইপো তথা নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক মাজাহার হোসেনের গলায়।
১৯৯৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এই কবিতীর্থে এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। সেই সময়ে অ্যাকাডেমির তরফে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কবির জন্মভিটের সামগ্রিক উন্নতি, এলাকায় নজরুলের একটি ভাল মানের সংগ্রহশালা ও একটি গবেষণাকেন্দ্র তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা অনুদানের কথাও ঘোষণা করেন। মাজাহার হোসেন বলেন, “সেই টাকা আজও পাইনি। ভাবছি পুরনো সেই কাগজপত্র নিয়ে ফের আবেদন করব।” আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “আমার সঙ্গে অ্যাকাডেমির সদস্যেরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করলে আমি উদ্যোগী হব।”
কাজী মাজাহার হোসেনের বক্তব্য, “এক-দু’দিনে কি আর কবির কীর্তি বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা সম্ভব? সারা বছর এখানে কর্মসূচি পালন করা উচিত। কিন্তু তা একা অ্যাকাডেমির পক্ষে সম্ভব নয়। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। অনেক বার সরকারের দ্বারস্থ হয়েছি। লাভ হয়নি।” তিনি জানান, কবি চেয়েছিলেন, চুরুলিয়ায় তাঁর জন্মভিটে লাগোয়া মসজিদের পিছনে কবরস্থানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হোক। অনেক চেষ্টা করেও কবিকে বাংলাদেশ থেকে আনা যায়নি। কিন্তু তাঁর সমাধির মাটি এনে কবিপত্নী প্রমীলার সমাধির পাশে রাখা হয়েছে।
অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়, কবির ব্যবহার্য জিনিসপত্রের সংগ্রহশালাটি আরও উন্নত হওয়া উচিত। তাঁর সমাধিক্ষেত্রটিও সাজার দরকার রয়েছে। এলাকার যুবক ভুট্টো সিদ্দিকি বলেন, “কবি তো দেশের সম্পদ। আমরা চাই, সবাই এগিয়ে আসুক তাঁর স্মৃতিরক্ষায়।” নজরুল গবেষক তথা শিক্ষাবিদ হারাধন দত্তের দাবি, “এখানে একটা গবেষণাকেন্দ্র গড়ে তোলা হোক। গবেষণায় ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা এখানে এলে বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে পড়বে কবির কীর্তি।”