Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাস রুখেছে মানুষ, বলছে বাম

সন্ত্রাস হতে পারে, প্রশাসনের কাছে এই আশঙ্কা জানানো হয়েছিল বারবার। তবু কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মেলেনি বেশির ভাগ বুথেই। ভোটের দিন সকাল থেকেই একের পর এক আসতে থাকে বুথ দখল, রিগিংয়ের অভিযোগ। কিন্তু দিনের শেষে জামুড়িয়া কেন্দ্রে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা রুখে দাঁড়িয়েছেন বলেই মনে করছেন সিপিএম নেতারা। হুমকি, ভোট দিতে যেতে বাধা সত্ত্বেও তাই মানুষ বুথে পৌঁছতে পেরেছেন বলে মনে করছেন তাঁরা।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০১:১৯
স্ট্রং রুমে পাহারা। আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

স্ট্রং রুমে পাহারা। আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

সন্ত্রাস হতে পারে, প্রশাসনের কাছে এই আশঙ্কা জানানো হয়েছিল বারবার। তবু কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মেলেনি বেশির ভাগ বুথেই। ভোটের দিন সকাল থেকেই একের পর এক আসতে থাকে বুথ দখল, রিগিংয়ের অভিযোগ। কিন্তু দিনের শেষে জামুড়িয়া কেন্দ্রে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা রুখে দাঁড়িয়েছেন বলেই মনে করছেন সিপিএম নেতারা। হুমকি, ভোট দিতে যেতে বাধা সত্ত্বেও তাই মানুষ বুথে পৌঁছতে পেরেছেন বলে মনে করছেন তাঁরা।

ভোটের আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সার্থকপুর গ্রামে বহিরাগত লোকজন নিয়ে হুমকি দিতে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের দাবি, কিছু গ্রামবাসী প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। তৃণমূলের সাত কর্মীকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় তারা। তিনটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ তাদের এক কর্মীকে গ্রেফতার করলেও বহিরাগতদের কাউকে ধরেনি বলে অভিযোগ সিপিএমের। সিপিএম নেতাদের দাবি, ভোটের দিন এলাকায় ভয় দেখাতে গিয়েও তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পালিয়ে যায়।

ভোট দিতে যাওয়ার সময়ে হুবডুবি গ্রামের শ’দেড়েক বাসিন্দাকে মাঝ রাস্তা থেকে কিছু দুষ্কৃতী হুমকি দিয়ে ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। কিন্তু বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে পুলিশি পাহারার মধ্যে ভোট দিতে যান ওই বাসিন্দারা। ভোট দেওয়ার পরে আবার বুথ লাগোয়া গ্রামের বেশ কিছু লোকজন নিরাপত্তা দিয়ে গ্রামে ফিরিয়ে দেন ওই ভোটারদের। সত্তর গ্রামে আবার ভোটের দিন সিপিএমের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে প্রথমে। তৃণমূলের দুই রিলিভার এজেন্ট প্রহৃত হন দুপুরে। পরে অবশ্য সেখানে পাল্টা হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই গ্রামে অশান্তির আগুন জ্বলেছে বৃহস্পতিবারও।

স্থানীয় সূত্রে খবর, দরবারডাঙায় বুথের কাছে কিছু বহিরাগত লোক মোটরবাইক চড়ে এসে ভোটের লাইন থেকে দু’জনের ভোটার কার্ড কেড়ে নিতেই প্রতিরোধ করেন ভোটারেরা। বহিরাগতেরা এলাকা না ছাড়া পর্যন্ত ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে তাঁরাই বুথে ঢোকার দরজা বন্ধ করে দেন। ঘণ্টাখানেক পরে ভোট চালু হয়। মদনতোড় গ্রামে বুথ থেকে সিপিএমের এজেন্টকে বের করে দিতে গেলে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনই বাধা দেন বলে দাবি সিপিএমের। তাঁদের এলাকায় প্রতিরোধের এই ধরনের চেষ্টা অন্যত্র দেখা যায়নি বলে জামুড়িয়ার সিপিএম নেতাদের দাবি।

১৯৮৯ থেকে এখনও পর্যন্ত টানা এই আসানসোল কেন্দ্রে জিতে এসেছে বামেরা। তাতে জামুড়িয়ার ভোট বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে স্থানীয় সিপিএম নেতাদের দাবি। গত লোকসভা ভোটেও এই এলাকা থেকে সিপিএম প্রার্থী বংশগোপাল চৌধুরী প্রায় ৩৫ হাজার ভোটের ‘লিড’ পেয়েছিলেন। ২০১১ সালে ‘লালদুর্গ’ বর্ধমানের একের পর এক কেন্দ্রে যখন দলের ভরাডুবি হয়েছে, এই জামুড়িয়া কেন্দ্রে কিন্তু সিপিএম প্রার্থী জিতেছিলেন প্রায় তেরো হাজার ভোটে। সিপিএমের অজয় জোনাল সম্পাদক মনোজ দত্তের দাবি, “রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পরে শত সন্ত্রাসের মধ্যে আমরা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করিনি। একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে মানুষের পাশে থেকেছি। এ বার ভোটের দিন তাই মানুষই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।”

এ বারের জামুড়িয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুব তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ঘটক অবশ্য বলেন, “যে সমস্ত বুথে ওরা প্রতিরোধের গল্প বলছে, সেখানে আগে ওরা যে ভাবে সন্ত্রাস চালিয়ে ভোট করত, এ বারেও সেই চেষ্টা করেছিল। মানুষ ওদের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ করেছেন। জামুড়িয়ার মানুষ কাকে ভোটে দিয়েছেন, ১৬ মে ওরা টের পাবে।”

nilotpal chowdhury jamuria
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy