Advertisement
E-Paper

হুমকিতে অভিযুক্ত শিক্ষক গ্রেফতার

ছাত্রীকে ‘বাইরের লোক দিয়ে ধর্ষণ’ করানোর হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত দুর্গাপুরের সরকারি আবাসিক আদিবাসী স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের শিক্ষকের নাম বিশুদ্ধানন্দ রায়। তাকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০৯
ধৃত শিক্ষক। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃত শিক্ষক। —নিজস্ব চিত্র।

ছাত্রীকে ‘বাইরের লোক দিয়ে ধর্ষণ’ করানোর হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত দুর্গাপুরের সরকারি আবাসিক আদিবাসী স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের শিক্ষকের নাম বিশুদ্ধানন্দ রায়। তাকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে হস্টেল ও স্কুল পরিচালনার গড়মিলের অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে ছাত্রীরা সরব হয়। তখন নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তিনি বাইরের লোক এনে ধর্ষণ করানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পড়ুয়ারা মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে পড়ুয়ারা জানায়, ২২ জুলাই নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ওই প্রধান শিক্ষক ক্লাস থেকে টেনে বের করার চেষ্টা করেন এবং ধর্ষণ করানোর হুমকি দেন। তাঁকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আদিবাসী সংগঠন খেড়ওয়ালগাড় বিকাশ পরিষদ এবং তৃণমূল শিক্ষা সেল নিউ টাউনশিপ থানায় স্মারকলিপি দেয়। হাইকোর্টে গিয়ে তখন তিনি আগাম জামিন নেন। এর পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি জানান, বিএড সংক্রান্ত দরখাস্ত জমা দিতে গেলে তাঁর সঙ্গে বাদানুবাদের জেরে তাঁকে মারধর এবং সম্মানহানির হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। স্কুল পরিচালনায় বহু আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলেন ওই শিক্ষিকা। এছাড়াও অন্য এক শিক্ষিকাও ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরেই কার্যত গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বিশুদ্ধানন্দবাবু। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। এ দিকে মহকুমা প্রশাসন স্কুলের আর্থিক অনিয়ম নিয়ে তদন্তে নেমে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রমাণ পায়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে পুলিশের কাছে মহকুমা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।

স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক কস্তুরি সেনগুপ্ত বলেন, “ওই স্কুল সম্পর্কে ইতিমধ্যেই বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। সব অভিযোগেরই পৃথক তদন্ত করা হয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়েছে।” ২০০৫ সালে দুর্গাপুরের এই স্কুলটি অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর এই আবাসিক আদিবাসী স্কুলটি গড়ে তুলেছিল। প্রথমে শ’খানেক পড়ুয়া নিয়ে অস্থায়ী ঠিকানায় স্কুলটি চালু হয়। একটি বেসরকারি কারখানার অব্যবহৃত কয়েকটি আবাসন নাম মাত্র ভাড়ায় নিয়ে হস্টেল চালু হয়। চলতি বছরের মাঝামাঝি স্কুলটি ফুলঝোড়ে নতুন স্থায়ী বাড়িতে উঠে আসে। বর্তমানে এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৪০০। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। বর্ধমান ছাড়াও পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলা থেকে পড়ুয়ারা এখানে পড়তে আসে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, এর আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ জানানো হলেও স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও ব্যবস্থা নেননি। কল্যাণবাবু এ দিনও প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়েছেন। তাঁর দাবি, “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে একের পর এক অভিযোগ আনা হয়েছে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

durgapur threat teacher arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy