প্রতীকী ছবি।
পঞ্চাশ কোটি টাকা দিয়ে রাজ্যে পথ-নিরাপত্তা তহবিলের সূচনা হয়েছিল। সেটা ছিল মূলত সড়কপথ। এ বার জলপথের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য পৃথক তহবিল তৈরি করা হচ্ছে সেই পঞ্চাশ কোটি দিয়েই। নাম হবে ‘রিভার সেফটি ফান্ড’ বা নদী নিরাপত্তা তহবিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছে, ধীরে ধীরে এই খাতে অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা করা হোক।
সম্প্রতি ভদ্রেশ্বরে জেটি দুর্ঘটনায় বেশ কিছু প্রাণহানির পরে জলপথের নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করার উদ্যোগ শুরু হয়। নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রায় ২৮০টি জেটি মেরামতি খাতে অর্থ দফতর ইতিমধ্যেই ২৮ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। ওই জেটিগুলিকে পাকাপোক্ত করে তোলার জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। এর বাইরে নতুন তহবিল তৈরির জন্য পরিবহণ দফতরকে আরও ৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে অর্থ দফতর।
কী হবে ওই তহবিলের অর্থ দিয়ে?
নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, মূলত জলপথের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং জেটি মেরামতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজে এই তহবিলের অধিকাংশ অর্থ খরচ করা হবে। এক নবান্ন-কর্তা বলেন, ‘‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স বা এইচআরবিসি-র কর্তা সাধনরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের পূর্ত, সুন্দরবন উন্নয়ন, সেচ এবং পরিবহণ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে যে-বিশেষজ্ঞ দল গড়া হয়েছে, তারা বেশ কিছু জেটিকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছে। সেগুলির দ্রুত সংস্কার দরকার।’’
নবান্নের ওই কর্তা জানান, বিপজ্জনক হিসেবে ঘোষিত জেটিগুলিকে পাকাপোক্ত ভাবে গড়ে তুলে ফের চালু করতে যে-টাকা লাগবে, তা আসবে ‘রিভার সেফটি ফান্ড’ থেকেই। এ ছাড়াও নদীপথে উপযুক্ত আলো, ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করার খরচ জোগাবে ওই তহবিল। একই সঙ্গে তহবিলের একটা বড় অংশ খরচ করা হবে জলপথের নিরাপত্তা নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রচারের কাজে। রাজ্যের পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পথ-নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারের আদলেই জলপথ পরিবহণের সুরক্ষা নিয়ে প্রচার চালাতে চাইছে সরকার। জেটিগুলির সামনে তো বটেই, সেই সঙ্গে সড়কপথে, টেলিভিশনে এবং অবশ্যই খবরের কাগজে এই নিয়ে প্রচার চালাবে সরকার।’’
তবে মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রচারের জন্য মাত্র পঞ্চাশ কোটি টাকার তহবিল যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। সেই জন্যই ওই তহবিলকে ৫০০ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘‘আমরা জলপথের উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেন্দ্রের অনুমোদন পেলে ঋণ নিতে আর কোনও বাধা থাকবে না। তার পরে সেই ঋণের টাকা থেকেই নদীপথের নিরাপত্তায় ৫০০ কোটি টাকার তহবিল গড়ার ইচ্ছে আছে,’’ বললেন রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy