প্রতীকী ছবি।
পেশায় তাঁরা সিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু তাঁদের কারও দাদা, কারও বা শাশুড়ি আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী প্রার্থী হয়েছেন। সেই ‘দোষে’ই জঙ্গলমহলের একাংশ সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কাউকে ‘ক্লোজ’ করা হচ্ছে সিআরপি ক্যাম্পে, কাউকে দিয়ে লেখানো হচ্ছে মুচলেকা।
ঝাড়গ্রাম জেলায় এখন তৃণমূলের আধিপত্য। তবে এ বার ভোটের আগে বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি, ভুলাভেদা ও শিমূলপাল গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে চিন্তায় রয়েছে শাসক-শিবির। পাহাড়-জঙ্গলঘেরা প্রত্যন্ত এই সব গ্রামে আদিবাসী-ভূমিজ সংগঠনের নেতারা গিয়ে ক্ষোভ উস্কে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। সিভিক ভলান্টিয়ারদের অনেকেই আদিবাসী ভূমিজ সম্প্রদায়ের। তাই শাসকদল নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না বলে বলে স্থানীয়দের দাবি।
অভিযোগ, ক’দিন আগেই বেলপাহাড়ি থানায় ডেকে পাঠিয়ে জনজাতি সম্প্রদায়ের এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে মুচলেকা লেখানো হয়েছে। তাঁকে লিখতে হয়েছে, কোনওভাবেই নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকবেন না। স্থানীয় সূত্রের খবর, চুবকা পঞ্চায়েত এলাকার এক সিভিক ভলান্টিয়ারের শাশুড়ি বল্লা বুথে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। তাই কোপে পড়েছেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের এক বিজেপি প্রার্থীর ভাই সিভিক ভলান্টিয়ার। কোপে পড়ে তিনিও ক্যাম্পে নির্বাসিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আর এক বিজেপি প্রার্থীর খুড়তুতো ভাইকেও সিভিক ভলান্টিয়ারের স্থানীয় কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের ১১ জন, সর্ডিহার ১০ জন, চুবকার দু’জন এবং বাঁধগোড়া পঞ্চায়েতের ৬ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে এলাকার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে এক মাসের জন্য রাধানগরের সিআরপি ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর অভিযোগ, “যে সব সিভিক ভলান্টিয়ারের আত্মীয়রা আমাদের প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের বেছে বেছে এলাকার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে থানায় অথবা ক্যাম্পে আটকে দেওয়া হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের গতিপ্রকৃতি কোন পথে যাবে, হাইকোর্টে আজ নজর সব পক্ষের
রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বিস্তীর্ণ জঙ্গলমহলের বহু যুবকই সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ পেয়েছেন। এলাকায় নজরদারি, যানশাসন থেকে স্থানীয় খবরাখবর থানায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন এই সিভিক ভলান্টিয়াররা। স্থানীয় সূত্রের খবর, এঁদের বেশিরভাগই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তাঁদেরই কেউ কেউ পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের চোরা সমর্থন করছে না তো— শাসক শিবিরের এমন সংশয়েই একাংশ সিভিক ভলান্টিয়ার কোপে পড়ছেন বলে অভিযোগ। যদিও তা মানতে নারাজ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তিনি বলেন, “হেরে যাওয়ার ভয়ে বিরোধীরা এখন থেকেই অজুহাত খাড়া করছে।” অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশও। ঝাড়গ্রামের জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, “এলাকার ক্যাম্পগুলি বিভিন্ন সময়ে সিভিক ভলান্টিয়াররা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। এটা লাগাতার প্রক্রিয়া।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy