Advertisement
০৯ মে ২০২৪
State News

জায়ের বিরুদ্ধে ময়দানে ‘ক্ষুব্ধ’ অঞ্জলি

অঞ্জলির জা যে সে প্রার্থী নন। তিনি মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ নিয়তি মাহাতো। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো আসরে নেমেও অঞ্জলিকে ভোটের ময়দান থেকে সরিয়ে আনতে পারেননি।

অঞ্জলি মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র

অঞ্জলি মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র

সমীর দত্ত
মানবাজার শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

দলের শীর্ষ নেতার সামনে জেলার নেতা তথা মন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘অঞ্জলি ভোটে লড়বেন না।’’ মানতে পারেননি বছর পঞ্চান্নর অঞ্জলি। পুরুলিয়ার মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সদস্য তৃণমূলের অঞ্জলি মাহাতো। দলের নেতারা বোঝানোয় যেখানে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের অনেক বিক্ষুব্ধই ‘গোঁজ’ হয়ে দাঁড়ানোয় ক্ষান্ত দিয়েছেন, অঞ্জলি সেখানে অনড়। তিনি তৃণমূলের প্রতীক পাওয়া নিজের জায়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন।

অঞ্জলির জা যে সে প্রার্থী নন। তিনি মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ নিয়তি মাহাতো। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো আসরে নেমেও অঞ্জলিকে ভোটের ময়দান থেকে সরিয়ে আনতে পারেননি। তাই কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী প্রয়াত সীতারাম মাহাতোর পরিবারের এই দুই বৌমার লড়াইয়ের দিকে এখন অনেকের নজর।

মানবাজার ২ ব্লকের বারি গ্রামের বাসিন্দা সীতারাম মাহাতোর পরিবারে বিয়ে হয়ে আসার পরেই নিয়তি ও অঞ্জলির রাজনীতিতে পা রাখা। নিয়তি সীতারামবাবুর পুত্রবধূ আর অঞ্জলি তাঁর ভাইপোর স্ত্রী। দু’জনকেই সীতারামবাবুর সঙ্গে ভোটের প্রচারে দেখেছেন এলাকাবাসী। তৃণমূলের জন্মলগ্নে সীতারামবাবুর সঙ্গে নিয়তি সে দলে চলে আসেন। ২০১১ সালে তৃণমূলে যোগ দেন অঞ্জলি। তার আগে কংগ্রেসের হয়ে অঞ্জলি আর তৃণমূলের হয়ে নিয়তি ভোট-ময়দানে নামতেন। কিন্তু কোনও দিন মুখোমুখি লড়াই হয়নি। এ বার হচ্ছে। জেলা পরিষদের ৩ নম্বর আসনের জন্য।

এক উঠোনের দু’প্রান্তে তাঁদের বাড়ি। দুই প্রার্থীই জানান, তাঁদের সকাল-বিকেল মুখ দেখাদেখি হয়। কথাবার্তাও হয়। কিন্তু বাড়িতে ভোট-প্রসঙ্গ মুখে আনেন না কেউই।

যদিও আড়ালে অঞ্জলি দাবি করছেন, ‘‘দিদি (নিয়তি) সারা বছর পুরুলিয়ায় ব্যস্ত থাকেন। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মীরা এখানে আমাকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জেলা স্তরের কিছু নেতা দিদিকে উপর থেকে চাপিয়ে দিয়েছেন।’’ তৃণমূল সূত্রের দাবি, জেলা পরিষদের ওই আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন তৃণমূলের জেলা স্তরের নেতারা। অনেক আলোচনার পরে ‘আদি তৃণমূল’ নিয়তিকে বাছা হয়।

সম্প্রতি মানবাজারে দলীয় পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে সভা-মঞ্চ থেকে শান্তিরাম ঘোষণা করেন, অঞ্জলি ভোটে লড়বেন না, এমনটাই ঠিক হয়েছে। কিন্তু সভা ভাঙতেই অঞ্জলিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘ক্ষোভের কথা অভিষেককে বলতে এসেছিলাম। সভায় যা বলা হল, তা মানছি না। লড়াই থেকে সরার প্রশ্নই নেই।’’

অঞ্জলি বলছেন, ‘‘ঘাসফুলের প্রতীক পাইনি তো কী হয়েছে? বৈদ্যুতিক পাখার চিহ্নেই লোকে আমাকে জেতাবে।’’ আমল দিতে নারাজ নিয়তি। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘প্রতীকেই ভোট হয়।’’ আশা ছাড়ছেন না শান্তিরামও। বলছেন, ‘‘এখনও ক’টা দিন রয়েছে। দেখি অঞ্জলিকে যদি বোঝানো যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE