Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

সকালেই পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যপালের রিপোর্ট, তার পরেই হিংসা নিয়ে চড়া স্বর প্রধানমন্ত্রীর

কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বিগ্ন ছিল। নবান্নের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, জানা গিয়েছিল সোমবার রাতেই। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিও আলাদা করে রিপোর্ট পাঠাবেন রাজনাথ সিংহের মন্ত্রকে, তা-ও জানা গিয়েছিল।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ১৪:৩৬
Share: Save:

ভোটের দিকে দিনভর নজর ছিল রাজভবনের। ভয়াবহ হিংসার খবর মিলছিল রাজ্যের প্রায় সব প্রান্ত থেকে। সে ছবি দেখার পর আর কালক্ষেপ করেননি রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। রাত পোহাতেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন কেন্দ্রে। রাজভবন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালেই কেশরীর পাঠানো রিপোর্ট পৌঁছে গিয়েছিল কেন্দ্রে। আর তার কয়েক ঘণ্টা পরেই বিজেপি সদর দফতর থেকে নরেন্দ্র মোদীর তীব্র আক্রমণ, বাংলায় গণতন্ত্রকে খুন করে ফেলা হয়েছে বলে মন্তব্য।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ঘিরে পরিস্থিতি বাংলায় কতটা হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল সোমবার, সে ছবি শুধু রাজ্যের মিডিয়া নয়, গোটা দেশের মিডিয়াতেই দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বিগ্ন ছিল। নবান্নের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, জানা গিয়েছিল সোমবার রাতেই। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিও আলাদা করে রিপোর্ট পাঠাবেন রাজনাথ সিংহের মন্ত্রকে, তা-ও জানা গিয়েছিল।

নবান্নের রিপোর্টের কোনও খোঁজ এখনও নেই। কিন্তু রাজভবন ২৪ ঘণ্টাও কাটতে দেয়নি ভোট মেটার পরে। রাতের মধ্যেই সবিস্তার রিপোর্ট তৈরি করে ফেলা হয়। মঙ্গলবার সকালেই তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পৌঁছে যায় বলে রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।

কী জানিয়েছেন রাজ্যপাল নিজের রিপোর্টে? ভোটগ্রহণ ঘিরে পরিস্থিতি কতটা হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল সোমবার, রিপোর্টে তারই বিশদ বিবরণ কেন্দ্রকে জানিয়েছেন কেশরী।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কোন কোন এলাকা থেকে হিংসার খবর এসেছে, কতগুলি বুথ আক্রান্ত হয়েছে, কোথায় গুলি চলেছে, কোথায় বোমাবাজি হয়েছে, কোথায় ছাপ্পা ভোট হয়েছে, কোথায় ব্যালট লুঠ হয়েছে, কোথায় ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছে, কোথায় ভোটকর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন— রাজ্যপালের রিপোর্টে সে সব তো উল্লেখ করা হয়েছেই। ভোট ঘিরে যে ভাবে প্রায় অবাধে খুন-জখম চলেছে দিনভর, রিপোর্টে তারও সবিস্তার বিবরণ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে ওরা বলল, ছবি তুললেই মেরে দেব’

কোথায় হামলা হয়েছে, কারা হামলা চালিয়েছে, খুন হয়েছেন কে, পুলিশের কাছে কী অভিযোগ জমা পড়েছে, গোয়েন্দা সূত্র কী বলছে— রাজ্যপালের রিপোর্টে সমস্তই তুলে ধরা হয়েছে। জানা গিয়েছে রাজভবন সূত্রেই।

মঙ্গলবার সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পৌঁছয় রিপোর্ট। কিন্তু বাংলায় ভোটগ্রহণ ঘিরে যে রকম হিংসার ছবি সোমবার দিনভর দেখা গিয়েছিল, তাতে উদ্বিগ্ন ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। সেই কারণেই নবান্ন থেকে রিপোর্ট তলবের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। এই পরিস্থিতিতে বাংলার রাজ্যপালের পাঠানো রিপোর্ট যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে আটকে থাকবে না, পিএমও-তেও পৌঁছবে দ্রুতই, তা বলা বাহুল্য।

আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত মগরাহাট, গুলিবিদ্ধ ৬, অভিযুক্ত তৃণমূল

প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজেপি সদর দফতর থেকে যে ভাষণ দেন, তাতে বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রায় আড়াই মিনিট কথা বলেন তিনি। ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ হয়েছে বলে মন্তব্যও করেন। বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব রাজনৈতিক দল, বাংলার সুশীল সমাজ এবং দেশের বিচারবিভাগকেও এর বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। মোদীর এই চড়া স্বরের নেপথ্যে কেশরীর রিপোর্টের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE