Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইস্তাহারে সংশয়, বিরোধীদের সুর গণতন্ত্র ফেরানোই

লোকসভা বা বিধানসভার মতো পঞ্চায়েতেও নির্বাচন ঘোষণা হলে আগে ইস্তাহার প্রকাশ করে দিত বামফ্রন্ট। সে দিন অবশ্য গত হয়েছে!

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:১১
Share: Save:

কত শতাংশ আসনে শেষ পর্যন্ত ভোট হবে, ঠিক নেই! যে সব আসনে বিরোধীদের প্রার্থী থাকবে, সেখানেও সুষ্ঠু ভোট কত দূর হবে, তা নিয়ে সংশয়! এই পরিস্থিতিতে একই রকম সংশয়ে বিরোধীদের নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরির কাজও।

লোকসভা বা বিধানসভার মতো পঞ্চায়েতেও নির্বাচন ঘোষণা হলে আগে ইস্তাহার প্রকাশ করে দিত বামফ্রন্ট। সে দিন অবশ্য গত হয়েছে! এখন প্রার্থী খুঁজে, শাসক ও পুলিশ বাহিনীর যৌথ হানা ঠেকিয়ে তাঁদের মনোনয়ন করিয়ে এবং জোর করে প্রত্যাহার আটকাতে তাঁদের নিরাপত্তার বন্দোবস্তের কথা ভাবতেই আকুল বাম শিবির। একই চিন্তা বাকি বিরোধীদেরও। তাই মনোনয়ন-পর্ব শেষ হতে চললেও নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরিতে হাত দিতে পারেনি কোনও পক্ষই। বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতৃত্ব ঠিক করেছেন, শেষমেশ পূর্ণাঙ্গ ইস্তাহার না করা গেলে ভোটারদের প্রতি লিখিত আবেদন অন্তত করা হবে। এবং সেখানে তিন পক্ষেরই মূল বক্তব্য হবে রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরানোর আহ্বান।

বিরোধীদের উদ্বেগ, মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়েই যা হাঙ্গামা হচ্ছে, ইস্তাহার প্রচার করার সুযোগ তাঁরা আদৌ পাবেন কি? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্রের বক্তব্য, ‘‘প্রথমে আমাদের আলোচনা হয়েছিল, রাজ্য বামফ্রন্টের তরফে ইস্তাহার তৈরি করা হবে। তার পরে হঠাৎ করে ভোট ঘোষণা এবং মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির জেরে এই নিয়ে আর আলোচনা হয়নি।’’ আলিমুদ্দিনের হিসেব বলছে, রাজ্যের সব জেলায় পরিস্থিতি এক রকম নয়। যেখানে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব যত বেশি, সেখানে বিরোধীরা মনোনয়ন দিতে তত কম বাধা পাচ্ছে! উত্তরবঙ্গের অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় ভাল। দক্ষিণেও কিছু জেলায় সার্বিক অশান্তি। আবার পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লক, বাঁকুড়ার কয়েকটি ব্লক, নদিয়ার রানাঘাটের দু’টি ও শান্তিপুর, হাঁসখালি ব্লকে গোলমাল বেশি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেলে বাম নেতৃত্বকে হিসেব নিতে হবে, কোথায় কতটুকু প্রচার তাঁরা করতে পারবেন!

প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী সরাসরিই বলছেন, ‘‘বিরোধীদের প্রার্থীই দিতে দিচ্ছে না! মানুষ ভোট দেবেন কাকে? তা হলে আর কীসের ইস্তাহার?’’ কংগ্রেসেরও পরিকল্পনা, তেমন হলে নৈরাজ্য বন্ধ করে গণতন্ত্র ফেরানোর লক্ষ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য মানুষের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হবে।

বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ অবশ্য বলছেন, ‘‘ইস্তাহার আমরা করব। দলের পঞ্চায়েত কমিটি ও রাজ্য নেতৃত্ব আলোচনায় বসে বিষয়টা ঠিক করবে।’’ বিজেপিরও মূল সুর, রাজ্যে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরাতে হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বহু প্রকল্পের সুযোগ বাংলার মানুষ পাচ্ছেন না। সেই সব প্রকল্পের কথা তাঁদের জানাতে হবে।

শাসক দলের স্বভাবতই এ সব উদ্বেগ নেই। উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে তৃণমূল একটি পুস্তিকা তৈরি করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় ‘উন্নয়ন’ই এখন তাদের মস্ত হাতিয়ার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE