প্রস্তুতি: ভোটের আগে ব্যস্ততা তুঙ্গে পুলিশকর্মীদের। রবিবার বারুইপুরে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
মাসদুয়েকের টানাপড়েন শেষে আজ, সোমবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। কোনও ভয়-ভীতির কাছে মাথা নত না করে নির্ভয়ে ভোট দিতে গ্রামবাংলার মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন শাসক ও বিরোধী, উভয় পক্ষের নেতৃত্বই।
নবম পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ বার ৩৪% আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে শাসক দল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবশ্য সেই সব আসনের ফল ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, ত্রিস্তর মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার ৫২৯ আসনে আজ ভোট। প্রার্থী আছেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৬১১ জন। বুথের সংখ্যা প্রায় ৪৬ হাজার ৭০৬। ভোট-পাহারার জন্য মোতায়েন থাকছে এ রাজ্যের ৭১ হাজার ৫০০ পুলিশ। ভিন্ রাজ্য থেকে নিরাপত্তারক্ষী আসছেন ১৮০০। বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের ইতিহাস অনেক বছর ধরেই রক্তাক্ত। আর এ বারের ভোটের আগের ঘটনাবলি বিবেচনায় রাখলে আজ সংশ্লিষ্ট সব মহলের নজর ‘সুষ্ঠু ও অবাধ’ ভোটদানের দিকেই। যে কারণে ভোটের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে, তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করার পথে প্রশাসন সতর্ক থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, ‘‘এই নির্বাচন গ্রামবাংলার উন্নয়নের ভোট।’’ জেলায় জেলায় রাজ্য সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির জোরে তাঁরা পঞ্চায়েত বৈতরণী অনায়াসে পার হবেন বলে শাসক দলের নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসী। তৃণমূল স্তরে উন্নয়নের সুফল আরও ভাল ভাবে পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের জন্য এই নির্বাচনের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও শাসক দলের অন্য নেতারাও। ভোটের আগে এবিপি আনন্দ-সি ভোটারের করা তিন দফার জনমত সমীক্ষাও তৃণমূলকে বিরোধীদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছে।
ভোটের আগের দিন, রবিবারই প্রবল ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতে প্রাণহানি ঘটেছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। ভোটের দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কালো ছায়াও তাই থাকছে। যে দিকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, ‘‘প্রকৃতির উপরে তো কারও হাত থাকে না। এই জন্যই আমরা ভোটটা আগে করে নিতে চেয়েছিলাম। এই সময় থেকে ঝড়-বৃষ্টি বেড়ে যায়।’’
মুখ্যমন্ত্রী শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য প্রশাসনিক সতর্কতার আশ্বাস দিলেও বিরোধীরা অবশ্য সংশয়ী। তাদের মতে, এই ভোট ঘিরে যে রকম ‘বেনজির প্রহসন’ হচ্ছে, তার পরে হার-জিতের বিশ্লেষণ অবান্তর! মনোনয়ন-পর্ব থেকেই যা কাণ্ড ঘটেছে, তার প্রেক্ষিতেই ২১টি জেলায় এক দিনের ভোটে সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলছে। প্রচার শেষ এবং ভোট শুরুর মাঝের সময়ে জেলায় জেলায় বিরোধী প্রার্থী ও ভোটারদের ‘ভয়’ দেখানো, বাইক বাহিনীর দাপাদাপি শুরু হয়েছে বলেও কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তারা। এর মধ্যেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং বিজেপির শমীক ভট্টাচার্যের আহ্বান— নিজের ভোট নিজে দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy