Advertisement
১৭ মে ২০২৪

নন্দীগ্রামে খুন ২ সিপিএম কর্মী

সোমবার দুপুরে ভোটগ্রহণ চলাকালীনই নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের খোদামবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গোপালপুর গ্রামে ৩৩ নম্বর বুথের সামনে গুলি চলে বলে অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দ মণ্ডল ও কেশব মান্না
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৬:৩৮
Share: Save:

মনোনয়ন পর্বে ঠান্ডা। রবিবার রাত পর্যন্তও সব চুপচাপ। ভোটের দিন সেই নন্দীগ্রামেই খুন হলেন দু’জন। ফের শিরোনামে পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর।

সোমবার দুপুরে ভোটগ্রহণ চলাকালীনই নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের খোদামবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গোপালপুর গ্রামে ৩৩ নম্বর বুথের সামনে গুলি চলে বলে অভিযোগ। বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় বিশ্বজিৎ মান্না (২৮) ও যজ্ঞেশ্বর ঘোষ (৬৫ )-কে। গুলিতে জখম হন আরও পাঁচ জন। গোপালপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ও যজ্ঞেশ্বর সিপিএম কর্মী বলেই এলাকায় পরিচিত।

নন্দীগ্রামে সিপিএম কর্মীর মৃত্যুর খবর জেনে অনেকেরই প্রতিক্রিয়া—লড়াইয়ে তা হলে ছিল বামেরা?

সিপিএম সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম জুড়ে বহু আসনেই প্রতীকে প্রার্থী দিতে পারেনি দল। তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। খোদামবাড়ি ২ পঞ্চায়েতের গোপালপুরেও ছিল সেই ছবি। সোমবার সকাল থেকে ৩৩ নম্বর ওই বুথে ভোট চলাকালীন তৃণমূল কর্মীরা বাইকে চেপে এসে বুথ দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।

প্রথমে সিপিএম কর্মীদের বাধায় তারা ফিরে যায়। তার পর দুপুর সওয়া একটা নাগাদ আরও বেশি বাইক নিয়ে তৃণমূলের বাহিনী ফের ওই বুথে ঢুকে পড়ে ছাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বোমা-গুলি ছুড়তে ছুড়তেই তারা হামলা চালায় বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। সিপিএমের দাবি, বুথের সামনে দাঁড়ানো বিশ্বজিতের বুকে ও মাথায় গুলি লাগে, আর যজ্ঞেশ্বরবাবুর বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় গুলি। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়।

সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘গোটা নন্দীগ্রামে আমাদের প্রার্থী ছিল সাকুল্যে ১৬ জন। তাও ভোটের দিন রক্ত ঝরল, কারণ শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেছিলেন, বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়লে পাঁচ কোটি টাকা ইনাম দেওয়া হবে।।’’ শুভেন্দুর দাবি, ‘‘ওই সিপিএম কর্মীরা বোমার ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছিলেন। তা ফেটেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।’’ আর ইনামের ঘোষণা প্রসঙ্গে শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘নিরঞ্জন সিহি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। ওঁর কথার কোনও গুরুত্ব নেই।

দু’জনের মৃত্যুর পরে তেতে ওঠে গোপালপুর। দেহ রেখে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলে। ওই বুথের তৃণমূল প্রার্থী রণজিৎ মাইতির গাড়িতেও দেওয়া হয় আগুন। বুথের একাংশে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, উদ্ধার করা হয় দেহ। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE