ভাইচুং ভুটিয়া। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল ছাড়লেন ভারতের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ক ভাইচুং। সোমবার এক টুইট বার্তায় তিনি নিজেই তৃণমূল থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেছেন।
সোমবার সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে টুইট করেন ভাইচুং ভুটিয়া। লেখেন, ‘‘আজ তৃণমূলের সদস্যপদ-সহ যাবতীয় পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তফা দিলাম। আমি ভারতের আর কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য রইলাম না।’’ দলের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল এ বিষয়ে কিছু জানে না। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’
২০১১ সালে ভাইচুং খেলা থেকে অবসর নেন। ২০১৩ সালে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। এর পর তিনি দু’বার তৃণমূলের প্রার্থী হন। লোকসভায় দাঁড়িয়েছিলেন দার্জিলিং কেন্দ্রে এবং বিধানসভায় শিলিগুড়িতে। কিন্তু কোনও বারই জেতেননি। যদিও দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা যথেষ্ট ছিল। এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ প্রিয় পাত্র ছিলেন। বঙ্গভূষণ সম্মান দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
As of today I have officially resigned from the membership and all the official and political posts of All India Trinamool Congress party. I am no longer a member or associated with any political party in India. #politics pic.twitter.com/2lUxJcbUDT
— Bhaichung Bhutia (@bhaichung15) February 26, 2018
কিন্তু মমতা সরকারের সেই ‘বঙ্গভূষণ’-ই কয়েক মাস আগে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে মুখ খুলে অস্বস্তিতে ফেলে দেন দলকে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সিকিমের একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাইচুং বলেছিলেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি চাই গোর্খাল্যান্ড আলাদা রাজ্য হোক। প্রায় তিন দশক ধরে পাহাড়ের মানুষ এই দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: মুকুলে ছেয়েছে ঘর, ফুলের স্বপ্ন বিজেপি-র
তবে তৃণমূলের একটা অংশের মতে, রাজ্যসভায় যাওয়ার টিকিট না পেয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েছিলেন ভাইচুং। তার ফলেই দলের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। ভাইচুং ক্রমশ নিজের রাজ্য সিকিমের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হওয়ার প্রস্তুতিও নিতে চাইছেন বলে কারও কারও ধারণা।
তবে ভাইচুঙের ঘনিষ্ঠদের ব্যাখ্যা, ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সিকিমের ভূমিপুত্র। সেখানে তাঁর ফুটবল দলও রয়েছে। সম্প্রতি দার্জিলিংকে কেন্দ্র করে সিকিমের সঙ্গে রাজনৈতিক টানাপড়েন শুরু হওয়ার পরে এ রাজ্যের কোনও রাজনৈতিক এবং সরকারি পদে থাকা ভাইচুঙের পক্ষে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সোমবার সকালে টুইট করার পর থেকে তিনি তাঁর একটি ফোন বন্ধ রেখেছেন। অন্য ফোনে পরিবারের কোনও সদস্য ছাড়া আর কারও ফোন তুলছেন না বলে ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
ভাইচুঙের সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূল শিবিরে। যদিও দলের কর্মীদের একাংশের দাবি, ভাইচুং যে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে তা দলের নেতৃত্ব আগাম আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। সে কারণেই কিছুদিন আগে ভাইচুংকে দার্জিলিং জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ বোর্ডের সদস্যপদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে এসে দলের ছাত্র-যুব সমাবেশ করলেও তাতে ডাক পাননি ভাইচুং।
গত এক বছরে শিলিগুড়িতে দল অথবা সরকারি কোনও অনুষ্ঠানেই তাঁকে দেখা যেত না বলে দাবি কর্মীদের। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘যা বলার রাজ্য থেকে বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy