E-Paper

জখমের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওড়িশার ঠিকানায় তৈরি করা ভানুর জাল আধার, দাবি সিআইডির

তদন্তকারীরা জেনেছেন, পড়শি রাজ্যের হাসপাতালে দগ্ধ ভানুকে ভর্তি করাতে সমস্যা হবে আঁচ করেই ওড়িশার ঠিকানায় জাল আধার কার্ড তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।

গোপাল পাত্র

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ০৭:৪৯
Bhanu Bag

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওড়িশার ঠিকানায় ভানুর জাল আধার কার্ড বানানো হয়। ফাইল চিত্র।

বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হয়েছিলেন এগরার খাদিকুলের কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগ। বেআইনি ওই কারখানার মালিক বৃদ্ধ ভানুকে চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি ওড়িশায় নিয়ে যান ছেলে ও ভাইপো। তখনই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওড়িশার ঠিকানায় ভানুর জাল আধার কার্ড বানানো হয়, এমনটাই জানা যাচ্ছে সিআইডি সূত্রে। যে পরিচয়পত্র দেখিয়ে ওড়িশায় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল ভানুকে।

শেষে সেই নার্সিংহোমেই মারা যান ভানু। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও এক ভাইপো। সিআইডি সূত্রে খবর, ভানুর আর এক ভাইপো, তাঁর মেজো ভাই কালীপদ বাগের ছেলে প্রসেনজিতের দোকান থেকেই রাতারাতি ওড়িশার ঠিকানায় জাল আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা এখন সেই পলাতক ভাইপোর খোঁজ চালাচ্ছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণ মানবকুমার সিঙ্ঘল বলেন, ‘‘সিআইডি গোটা ঘটনার তদন্ত করছে।’’

খাদিকুলে ১৬ মে বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণে ভানু-সহ মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তদন্তে জানা যাচ্ছে, জখম ভানুকে নিয়ে ছেলে পৃথ্বীজিৎ ও ভাইপো ইন্দ্রজিৎ যখন ওড়িশা রওনা দেন, তখনও বাড়িতে ছিলেন ভানুর স্ত্রী এবং তাঁর ছোট ও মেজো ভাইয়ের পরিবার। তদন্তকারীরা জেনেছেন, পড়শি রাজ্যের হাসপাতালে দগ্ধ ভানুকে ভর্তি করাতে সমস্যা হবে আঁচ করেই ওড়িশার ঠিকানায় জাল আধার কার্ড তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো পৃথ্বীজিৎ ও ইন্দ্রজিৎ মেজো কাকার বড় ছেলে প্রসেনজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এগরার গোপীনাথপুরে প্রসেনজিতের নিজের একটা সাইবার ক্যাফে রয়েছে। সিআইডি সূত্রে খবর, সেখানেই রাতারাতি কারিকুরি করে ভানুর জাল আধার কার্ড তৈরি করা হয় ওড়িশার ঠিকানা দিয়ে। প্রসেনজিতের ছোট ভাই চিরঞ্জিতের মাধ্যমে কটকের হাসপাতালে তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

একই দোতলা পাকা বাড়ির একপাশে থাকতেন ভানু, অন্য পাশে কালীপদরা। কালীপদ চাষ করেন, পানের বরজও আছে। তাঁর এক ছেলে প্রসেনজিৎ তিন বছর ধরে গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে ওই দোকান চালান। সেখানে প্রতিলিপি, আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি তৈরি করা হয়। দোকানটিতে এখন তালা। তবে দোকানের জমিও বেআইনি ভাবে দখল করা বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর। সূত্রের দাবি, জেঠু ভানুর বেআইনি বাজি কারখানায় ম্যানেজার ছিলেন কালীপদের ছোট ছেলে চিরঞ্জিত। বরাত অনুয়ায়ী বাজি তৈরি থেকে শ্রমিকদের মজুরি, হিসেবনিকেশ দেখা ছিল তাঁর কাজ। বিস্ফোরণের দিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ কারখানা থেকে তিনি বাড়ি চলে এসেছিলেন। প্রসেনজিৎ ও চিরঞ্জিতের মা ঝর্নারানি বাগের অবশ্য দাবি, ‘'আমাদের বাড়ির কেউ বাজি কারবারে যুক্ত নয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Egra Blast CID

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy