পশ্চিম মেদিনীপুর প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
দাসপুরে সোনা লুট ও প্রতারণার মামলা চলাকালে তিনি আদালতে হাজির ছিলেন বলে পশ্চিম মেদিনীপুর প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের দাবি। তা সত্ত্বেও নিম্ন আদালতের ‘অর্ডার’ অনুযায়ী তিনি ছিলেন গরহাজির। এই অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, আদালতে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা দায়রা বিচারক তাঁর ‘অর্ডার’-এ লিখেছেন, ভারতী আদালতে গরহাজির ছিলেন।
ভারতীর দাবি, ২ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার সোনা লুট ও প্রতারণা মামলায় তিনি যে শুধু আদালতে উপস্থিত ছিলেন তা-ই নয়। এজলাসে দাঁড়িয়ে তিনি বিচারকের অনুমতি নিয়ে নিজেই নিজের সওয়ালও করেন। ওই দিন শুধু ভারতী নন। সওয়ালে বলেছিলেন, তিনি নির্দোষ। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবীরাও।
ভারতীর আইনজীবী পিনাকী ভট্টাচার্য জানান, সে-দিন মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার যে নিজেই নিজের সওয়াল করেছিলেন, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি এবং আদালতের আইনজীবীরাও তার সাক্ষী। আদালতে ভারতীর উপস্থিতির খবর সম্প্রচার করা হয় বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে। ভারতীর মামলায় আদালতের ভিতর ও বাইরের ঘটনাক্রম পরের দিনে রাজ্যের প্রায় সব সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।’’ পিনাকীবাবুর দাবি, ‘‘ওই দিন সকালে ভারতীর সওয়ালের পরেও বিকেলে বিচারক অর্ডারে লেখেন, তিনি গরহাজির। ভারতীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও বহাল রাখেন বিচারক।’’ ভারতী বলেন, ‘‘বিচারক হয়তো কোনও ভাবে প্রভাবিত হয়ে ওই অর্ডার লিখতে বাধ্য হয়েছিলেন। আমি সে-দিনের বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়ো ফুটেজ এবং পরের দিন সব সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছি। নিম্ন আদালতের বিচারক কোন আইন অনুসারে ওই অর্ডার লিখেছেন, তা সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনা হচ্ছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আদালত সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দাসপুর থানায় সোনা লুট ও প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে সেই মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। তদন্তে ভারতীর নাম উঠে আসে বলে সিআইডি-র তদন্তকারীদের দাবি। কিন্তু ঘটনার পরে ভিন্ রাজ্যে আত্মগোপন করেন ভারতী। বিভিন্ন রাজ্যে বারবার তল্লাশি অভিযান চালিয়েও তাঁর নাগাল পাননি তদন্তকারীরা। ওই মামলায় ভারতী-ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে ভারতীকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আদালতের তরফে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় ভারতীর বিরুদ্ধে। গত এপ্রিলে সিআইডি-র ওই মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন ভারতী। সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, দাসপুরে সোনা লুট ও প্রতারণা মামলায় ভারতীকে গ্রেফতার করা যাবে। তার পরে, ২ মার্চ তিনি নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে সওয়াল করেছিলেন বলে ভারতীর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy