ভারতী ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত গড়বেতা থানার ওসি হীরক বিশ্বাসকে আগেই মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতীদেবীর ‘ঘনিষ্ঠ-বৃত্তে’ থাকা আর এক পুলিশ আধিকারিক সন্তোষ মণ্ডলকে বদলি করা হল উত্তরবঙ্গে। সন্তোষবাবু ঝাড়গ্রামের ডিএসপি (ডিইবি) ছিলেন। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির ডিএসপি (সার্কিট বেঞ্চ) করা হয়েছে তাঁকে। ঘটনায় ভারতী ‘ঘনিষ্ঠ’ অন্য পুলিশ আধিকারিকরাও বদলির সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কিত বলে পুলিশমহলের এক সূত্রে খবর।
রাজ্য পুলিশের এক সূত্রে খবর, ডিএসপি পদমর্যাদার ২০ জন পুলিশ আধিকারিকের বদলির নির্দেশ হয়েছে শুক্রবার। দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর হবে। এরমধ্যে সন্তোষ মণ্ডলও রয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের অন্য দুই ডিএসপি-রও বদলি হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিএসপি (ডিইবি) ছিলেন শঙ্করপ্রসাদ বিশ্বাস। শঙ্করবাবুর বদলি হয়েছে কলকাতায় ‘ডিরেক্টর অফ ইকোনোমিক্স অফেন্স’-এ। অন্য দিকে, ঝাড়গ্রামের ডিএসপি (অপারেশন) ছিলেন ত্রিদিব সরকার। ত্রিদিববাবুকে বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি (ক্রাইম) করা হয়েছে।
গত সোমবার ভারতীদেবীর বদলির নির্দেশ জারি হয়। পরদিন মঙ্গলবার সন্ধেয় জেলা ছাড়েন তিনি। গত বুধবার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব নেন অলোক রাজোরিয়া। ওইদিনই গড়বেতা থানার ওসি হীরকবাবুকে ক্লোজ করে দেওয়া হয়। ভারতী ‘ঘনিষ্ঠ’ অন্য পুলিশ আধিকারিকদের উপরও যে কোনও মুহূর্তে ‘কোপ’ পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন পুলিশ মহলে। পুলিশ সূত্রে খবর, পরিস্থিতি বুঝে ভারতী ‘ঘনিষ্ঠ’ তকমা ঝেড়ে ফেলতেও তৎপর হয়েছেন অনেকে।
পুলিশের এক সূত্রে খবর, ভারতী ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত সন্তোষ মণ্ডল খুব বেশি দিন ঝাড়গ্রামে যাননি। সবং উপ-নির্বাচনের আগে তাঁকে ঝাড়গ্রামে পাঠানো হয়। সন্তোষবাবু দীর্ঘদিন খড়্গপুরের এসডিপিও ছিলেন। খড়্গপুরের এসডিপিও-র আওতাধীন এলাকার মধ্যেই পড়ে সবং। পুলিশের এক সূত্রে খবর, তিন বছর কিংবা তার বেশি সময় ধরে যাঁরা এক এলাকায় থাকেন, নির্বাচনের সময় তাঁদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সন্তোষবাবুর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ছ’বছর থেকেছেন ভারতীদেবী। এই সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা অভিযোগে সরব হন বিরোধীরা। বরাবর ভারতী ঘোষের ‘আস্থাভাজন’ সন্তোষবাবুকে নিয়েও বিরোধীদের অভিযোগ ছিল বিস্তর। খড়্গপুর পুরসভা নির্বাচনে তিনি শাসকদলকে সবরকম ভাবে ‘সাহায্য’ দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। পুরবোর্ড গঠনেও তিনি সব রকম ‘সহায়তা’ করেন বলেও অভিযোগ। সবং উপ-নির্বাচনের সময়ও সন্তোষবাবুর নামে তৃণমূলকে ‘মদত’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা। সন্তোষবাবু বিরোধীদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সন্তোষ-ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, ইদানীং ভারতী ঘোষের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না সন্তোষ মণ্ডলের। দু’মাস আগে থেকেই সম্পর্কের অবনতি
হচ্ছিল। ভারতী ‘বৃত্ত’ থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেছিলেন সন্তোষবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy