বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপাদের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের তরফেও মন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বার্তা দিয়েছেন, পাহাড়ে স্বাভাবিক জনজীবন ফেরাতে চান তাঁরা।
এরই মধ্যে বিনয় তামাঙ্গ বলেছেন, ‘‘আমার বিমল গুরুঙ্গের চেয়ার বসার বা নতুন দল খোলার কোনও পরিকল্পনা নেই। আর আমি যদি টাকা খেতাম। তা হলে অনেকদিন আগে এসব করতে পারতাম। এমন যদি হয়, তাহলে আমাকে মানুষ দার্জিলিং থেকে বার দেবে। আমি পাহাড়ের মানুষের জন্য ভাল করতে চেয়েছি। কিন্তু ওরা কোনও কারণ নিজেদের গুরুত্বহীন ভাবছে। তাই এ সব করছে। আমি সবার শুভবুদ্ধির কামনা করছি।’’
এই পরিস্থিতিতে বিমল গুরুঙ্গ বন্ধ চালানোর হুঁশিয়ারি দিলেও, বেশি দিন পাহাড়-সমতলের মানুষ তা সহ্য করবেন না বলে মনে করছেন প্রায় সব দলের নেতারাই। যেমন জিএনএলএফ, জন আন্দোলন পার্টি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, আর একটু দেখে তাঁরাও বন্ধ তুলে পাহাড়কে স্বাভাবিক করতে পথে নামার কথা ভাববে। শুধু তাই নয়, সেবক পাহাড় যে ভাবে স্বাভাবিক হয়েছে, সে পথে হেঁটে সুকনাও ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে। এমনকী, মিরিকে ইদানীং হাট-বাজার খোলা রাখার খবরেও উৎসাহিত দার্জিলিং, কার্শিয়াং। তাই পাহাড়ের হোটেল মালিকদের সংগঠনের এক মুখপাত্র জানান, পাহাড়বাসীরা দলমত নির্বিশেষে পথে নামতে শুরু করলেই বন্ধ বিরোধীরা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
এই প্রসঙ্গে দার্জিলিঙের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সোনম লেপচা বলেন, ‘‘মোর্চার উত্থানের সময় জিএনএলএফ গোড়ায় হুমকি দিয়ে খুকুরি মিছিল করে বাজার গরম করতে চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র-রাজ্য পাশে থাকায় সে যাত্রায় গুরুঙ্গের পক্ষে কর্তৃত্ব স্থাপন করতে খুব সমস্যা হয়নি।’’ সে জন্যই হাল ছাড়তে রাজি নন পাহাড়বাসী। শিলিগুড়ির উপকণ্ঠের শালবাড়ির ব্যবসায়ী প্রেমা লামা বললেন, ‘‘আর বেশি দিন বন্ধ টানা যাবে না। পুলিশ-প্রশাসন কড়াকড়ি করলে কেউ অশান্তি করার সাহস পাবে না।’’
তবে জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা তামাঙ্গর আশঙ্কা, গোলমেলে পরিস্থিতি আরও বেশ কিছুদিন চলতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘বিনয় তামাঙ্গের ঘোষণায় পাহাড়ের আশার আলো দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু পাহাড়ের বাইরে বসে বিমল গুরুঙ্গের ফতোয়ায় পরিস্থিতি বদলে গেল। আবার অনিশ্চয়তার মেঘ দেখা দিয়েছে। পুজোর মুখে পর্যটন, চা শিল্প, সাধারণ ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পাহাড়বাসীকে ঠান্ডা মাথায় বুঝতে হবে।’’
এই অবস্থায়, শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ দার্জিলিং থেকে একটি ভিডিও বার্তা দেন মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ। তিনি তাতে বলেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন দরকার। আমি আশির দশকেও আন্দোলন করেছি। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। নতুন করে ভাবতে হবে। আমাদের এক নেতা (রোশন গিরি) দিল্লিতে বসে আছেন। আর বিমল গুরুঙ্গ অজানা কোনও জায়গায়। মানুষের সামনে তো একজন নেতা দরকার। তাই আমরা সাহস করে এগিয়ে এসেছি।’’ দিল্লি থেকে রোশন গিরি জানান, বিনয়কে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে জন্য তাঁর বার্তায় পাহাড়বাসী সাড়া দেবেন না বলে রোশনের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy