Advertisement
E-Paper

বন্‌ধ-পোস্টার ছিঁড়ে খুলে গেল পাহাড়

বেলা বাড়তেই পাল্টা পোস্টারে বিনয় তামাঙ্গপন্থীরা জানিয়ে দিলেন, গোর্খাল্যান্ড চাইলেও পাহাড়কে তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্র হতে দেবেন না। ফলে পাহাড়ের মানুষও সাহস পেয়ে ছিঁড়ে দিলেন গুরুঙ্গদের পোস্টার।

বিশ্বরূপ বসাক ও প্রতিভা গিরি

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪১
সচল: বন্ধ মোর্চার অফিস। তার নীচেই খুলেছে দোকান। শনিবার দার্জিলিঙের সিংমারিতে। —নিজস্ব চিত্র।

সচল: বন্ধ মোর্চার অফিস। তার নীচেই খুলেছে দোকান। শনিবার দার্জিলিঙের সিংমারিতে। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ-গুরুঙ্গ বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের চব্বিশ ঘণ্টা পরে শনিবার সকালে দার্জিলিঙের আবহওয়া হঠাৎ থমথমে করে দিল কয়েকটি পোস্টার। সেখানে দাবি করা হল, বিমল গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন করে বন্‌ধের ডাকও দেওয়া হয় কোনও কোনও পোস্টারে। কিন্তু বেলা বাড়তেই পাল্টা পোস্টারে বিনয় তামাঙ্গপন্থীরা জানিয়ে দিলেন, গোর্খাল্যান্ড চাইলেও পাহাড়কে তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্র হতে দেবেন না। ফলে পাহাড়ের মানুষও সাহস পেয়ে ছিঁড়ে দিলেন গুরুঙ্গদের পোস্টার। সিংমারিতে তালা বন্ধ মোর্চা দফতরের নীচে দোকানপাটও খুলে গেল।

শনিবার এই ছবি দেখার পরে বিনয়পন্থীরা বলছেন, কোণঠাসা বিমল গুরুঙ্গের প্রতি দল ও পাহাড়বাসীর সমর্থন যে তলানিতে ঠেকেছে, সেটা এ বার প্রমাণ হয়ে গেল! পাহাড় যে ফের উত্তপ্ত হল না, সে জন্য পাহাড়বাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিনয় নিজে। পাহাড়ের দোকানদার থেকে সাধারণ বাসিন্দা, অনেকেই বলছেন, কয়েক মাস আগেও এমন পরিস্থিতি ভাবা যেত না। সিংমারিতে গুলি চলে ১৭ জুন। সে দিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কেউ কেউ বলেন, তখন গুরুঙ্গের নামে একটা পোস্টার পড়লে কেউ ঝাঁপ খুলতে সাহস পেত না। আর এ দিন পাল্টা পোস্টার পড়তেই সকালের থমথমে ভাব কেটে গেল।

আরও পড়ুন:জনস্রোতে শেষ বিদায় সাহসীকে

পর্যটকেরা এক জন-দু’জন করে দার্জিলিঙে আসতে শুরু করেছেন এর মধ্যেই। শুক্রবার গুরুঙ্গ-অপারেশনের কথা জানার পরেও তাঁদের অনেককে ম্যালে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। চকবাজারও ছিল জমজমাট। একই ছবি শনিবারেও। বিদেশিরা ভিড় করেছেন গ্লেনারিজে। ক্যাভেন্টার্সের ছাদেও অনেক দিন পরে ‘ঠাঁই নাই’ দশা।

চৌরাস্তায় গরম পোশাক বিক্রি করেন অরুণা লামা, পূজা শেরপারা। তাঁরা বলছিলেন, ‘‘এত দিন ধরে টানা বন্‌ধে কার কী লাভ হয়েছে, জানি না। তবে আমাদের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে।’’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘‘জানি না, কী ভাবে সব সামাল দেব!’’ এঁদেরই আরও কেউ কেউ বললেন, ‘‘এ বারে বিনয়রা পাশে আছেন বলে আমরা সাহস পাচ্ছি। দোকান না খুললে খাব কী?’’

অথচ অডিও বার্তা এসেছে এ দিনও, গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ যুব নেতা সন্দীপ লামার। তিনি বলেছেন, ‘গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’ এর প্রতিবাদে পথে নামার ডাকও দেন তিনি। কিন্তু পাতলেবাসে গুরুঙ্গের বাড়ির এলাকা ছাড়া আর কোথাও থমথমে ভাবটা বজায় থাকেনি। সেখানে বা সিংমারিতে দেখা মেলেনি এক জনও গুরুঙ্গ-অনুগামীর। এলাকার এক জন বললেন, মাস তিনেক আগে এই বাড়ি ও পার্টি অফিসে পুলিশের তল্লাশি অভিযান আটকাতে কয়েক হাজার মোর্চা সমর্থক রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন।

কালিম্পঙে আবার ‘সুন্দর পাহাড়কে যারা অশান্ত করতে চাইছে’, তাদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে আর কোনও বন্‌ধ হবে না বলেও পোস্টারে জানানো হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, সবই তো ভাল। এখন দেখা যাক, পাহাড়ের এই ছবি ক’দিন টিকে থাকে।

Bimal Gurung Darjeeling Binay Tamang বিমল গুরুঙ্গ বিনয় তামাঙ্গ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy