দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বাঙালি বিশিষ্টদের একাংশ শুক্রবার ‘আতঙ্ক-বার্তা’ পাঠিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছে। শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তিনসুকিয়া-কাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে। বাংলায় লেখা সেই চিঠির প্রতিলিপি তিনি পাঠিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে। চিঠিতে দিলীপবাবু লিখেছেন, ‘অসমের মতো স্পর্শকাতর প্রদেশে এই রূপ ঘটনা খুবই চিন্তাজনক। কেন্দ্র সরকার বাঙালি হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এ রকম আশা করেন। অসম সরকার হত্যাকারীদের যথাযোগ্য শাস্তি বিধান করে সেই এলাকার হিন্দু বাঙালির মনে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবেন এবং ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা যাতে না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করবেন, এই আশা রাখছি’।
দিলীপবাবুর এই চিঠি থেকেই স্পষ্ট, তিনসুকিয়া-কাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির উপর পড়তে পারে বলে ভয় পাচ্ছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। বস্তুত, অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-কাণ্ডের পর থেকেই বিজেপিকে ‘বাঙালি বিরোধী’ তকমা দিয়ে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামেরা। তার মোকাবিলায় বিজেপি হাতিয়ার করছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংক্রান্ত প্রচারকে। কিন্তু তিনসুকিয়া-কাণ্ড তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামেদের হাতে বিজেপির বিরুদ্ধে আরও বড় হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। যার ফলে বাঙালি হিন্দুদের আস্থা অর্জনে মরিয়া রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে এখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখে উদ্বেগ প্রকাশ করতে হচ্ছে।
তবে তিনসুকিয়া-কাণ্ডের জেরে পরিস্থিতি যে জটিল হচ্ছে, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা বিঁধেছেন দিলীপবাবু। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, অসমে গন্ডগোল হোক। তা হলে ওঁর রাজনৈতিক রুটি সেঁকার সুবিধা হবে। আসলে ওঁর এ বিষয়ে কথা বলার অধিকারই নেই। কারণ, উনিই জাতিভিত্তিক এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেন।’’ তা হলে তিনসুকিয়া-কাণ্ড নিয়ে বিজেপির উদ্বেগ কেন? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘কারণ এখানে বিষয়টিকে রাজনৈতিক রং দেওয়া হচ্ছে। অসমের সরকার যথেষ্ট দক্ষ। তারা সমস্যার সমাধান করবে। কিন্তু এঁরা চাইছেন, গন্ডগোলটা বাড়ুক। তা হলে ওঁদের রাজনৈতিক সুবিধা হবে।’’ দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘তিনসুকিয়া-কাণ্ড কারা কেন ঘটিয়েছে, এখনও জানা যায়নি। এই ঘটনার সঙ্গে এনআরসি-কে যুক্ত করা অর্থহীন।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দিলীপবাবুর সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘দিলীপবাবুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম। ওঁর দলের সরকার অসমে যে ভূমিকা নিয়েছে, তাতে এ রাজ্যের মানুষের কাছে ওঁদেরই জবাবদিহি করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy