পুজো মিটতেই একাদশীর দিন আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। কয়েক দিনের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসে কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকার অন্তত ৩০টি আসনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করলেন তাঁরা। সূত্রের খবর, নাগরাকাটায় দলীয় জনপ্রতিনিধিদের উপরে হামলার আবহে ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘আগ্রাসী মেজাজে’র মোকাবিলায় মাটি কামড়ে রাজনৈতিক প্রতিরোধের বার্তাও দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
বিধাননগরে দলের রাজ্য দফতরে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে বাংলার নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব ও তাঁর সহকারী ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার প্রমুখ। ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল, দলের তথ্য-প্রযুক্তি শাখার প্রধান অমিত মালবীয় প্রমুখ। সূত্রের খবর, বৈঠকে উত্তরবঙ্গে দলীয় সাংসদ খগেন মুর্মু ও দলের পরিষদীয় দলের সচেতক শঙ্কর ঘোষের ‘প্রহৃত’ হওয়ার ঘটনাকে সামনে রেখে অনেকে বলেছেন, ভোট যত এগিয়ে আসবে তৃণমূলের ‘মারমুখী, আগ্রাসী মেজাজ’ আরও বাড়বে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় মাটি কামড়ে প্রতিরোধে করার দিকেই জোর দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্তও বলেছেন, “আমাদের বিধায়ক, সাংসদের উপরে যে ভাবে আক্রমণ হয়েছে, উত্তরবঙ্গে যা পরিস্থিতি, তা জানাব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।” সরাসরি বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু না-বললেও রাজ্য সভাপতি শমীকের বক্তব্য, “কী ভাবে মোকাবিলা হবে, দল বুঝে নেবে। কর্মীরা শক্তিশালী। ২০২১-এর ২ মে ৫৬ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছিলেন। বিজেপি কি উঠে গিয়েছে? এত অত্যাচারের পরেও, পঞ্চায়েতে ১১ হাজারের বেশি আসন আমরা জিতেছিলাম।”
বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ছাপ ফেলতে না-পারলে বিধানসভায় জেতা কঠিন। এই মুহূর্তে কলকাতার কাছাকাছি বলতে শুধু ভাটপাড়া আসনটি রয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। সেখানে এ বার অন্তত ৩০টি আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে বিজেপি। এই দিকে তাকিয়ে বিজয় ওঝা ও দীপাঞ্জন গুহকে নিয়ে একটি বিশেষ কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের বার্তাকে ভোট প্রচারের অভিমুখে নিয়ে আসতে দেবশ্রী চৌধুরীকে মাথায় বসিয়ে আরও একটি কমিটি গড়া হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)