Advertisement
E-Paper

ভাগাভাগি নিয়ে চিন্তা

২০০৯ সাল থেকে উত্তর মালদহের কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন মৌসম। তিনি দলের জেলা সভাপতিও ছিলেন। গত, তিন দিন আগে দলবদল করে নবান্নে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন উত্তর মালদহে কংগ্রেসের দু’বারের জয়ী প্রার্থী মৌসম

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:১৪
দািয়ত্বে: কার্যালয়ে মৌসম বেনজির নুর। নিজস্ব চিত্র

দািয়ত্বে: কার্যালয়ে মৌসম বেনজির নুর। নিজস্ব চিত্র

দলবদলের দিনই উত্তর মালদহে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে প্রয়াত গনিখানের ভাগ্নী মৌসম নুরের নাম ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ওই দিনই মৌসমের বিরুদ্ধে তাঁর মামাতুতো দাদা বিধায়ক ইশা খান চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রদেশ কংগ্রেস। বিধানসভার মতো লোকসভা নির্বাচনেও কোতুয়ালি পরিবারের লড়াই প্রকাশ্যে আসতে চলেছে জেলায়। আর ভোটের ময়দানে কোতুয়ালি পরিবারের লড়াই দেখে অঙ্ক কষছে বিজেপি। ভোট কাটাকাটির অঙ্কে উত্তর মালদহে বিজেপি সুবিধা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে রাজনৈতিক মহল। আর তাতে চিন্তায় কংগ্রেস ও তৃণমূল।

২০০৯ সাল থেকে উত্তর মালদহের কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন মৌসম। তিনি দলের জেলা সভাপতিও ছিলেন। গত, তিন দিন আগে দলবদল করে নবান্নে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন উত্তর মালদহে কংগ্রেসের দু’বারের জয়ী প্রার্থী মৌসম। ওই দিনই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বারও ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মৌসমের নাম ঘোষণা করে দেন। আর ওই দিনই প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব উত্তর মালদহের প্রার্থী হিসেবে সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরীর নাম ঘোষণা করে।

মৌসম ও ইশা খান দু’জনই কোতুয়ালি পরিবারের সদস্য। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা গনিখান চৌধুরীর বোন রুবিনুরের মেয়ে মৌসম। রুবিনুরের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে হাতে খড়ি হয় মৌসমের। প্রথমে সুজাপুরের বিধায়ক ছিলেন তিনি। তারপরে ২০০৯ সালে উত্তর মালদহের প্রার্থী হয়ে সাংসদ হন মৌসম। তাঁর আরও এক সাংসদ মামা আবু হাসেম খান চৌধুরীর (ডালু) ছেলে ইশা খান চৌধুরী। তিনি ২০১১ সালে বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে বৈষ্ণবনগরের পরিবর্তে সুজাপুর থেকে প্রার্থী হন ইশা খান। ওই বছর সুজাপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন তাঁর জেঠু আবু নাসের খান চৌধুরী (লেবু)। লেবুবাবু ইশার কাছে হেরে গিয়েছিলেন।

বিধানসভা ভোটে কাকা-ভাইপোর লড়াই দেখেছিল জেলাবাসী। এবার লোকসভা নির্বাচনে লড়াই ভাই-বোনের। তবে উত্তর মালদহে ভাই-বোনের লড়াইকে কাজে লাগাতে মরিয়া বিজেপি। উত্তর মালদহে ২৩টি জেলা পরিষদের আসন রয়েছে। তার মধ্যে ২২টিতে নির্বাচন হয়েছিল। তৃণমূলের ঝুলিতে ১৬টি, বিজেপির ছটি এবং কংগ্রেসের ঝুলিতে মাত্র দু’টি আসন রয়েছে। আর দশটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে সাতটি তৃণমূল, দুটি বিজেপি এবং একটি একক ভাবে দখল করেছে কংগ্রেস। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও তৃণমূলের পরেই রয়েছে বিজেপি। আর কংগ্রেস রয়েছে তৃতীয় স্থানে।

উত্তর মালদহে প্রথম এবং তৃতীয়ের লড়াই-এর ফলে দ্বিতীয় সুবিধা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে রাজনৈতিক মহল। তাঁদের দাবি, এখনও গনির প্রভাব রয়েছে জেলায়। গনির ভোট নিয়ে লড়াই হবে তাঁর পরিবারের দুই সদস্যের মধ্যে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটও ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “মৌসমের দলবদল ভাল ভাবে নেয়নি দলেরই নিচু তলার একাংশ কর্মী, সমর্থক। সেই হিন্দু সমর্থকদের ভোট বিজেপির দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” ইশা খান চৌধুরী বলেন, “আমি আগেই বলেছি, দল যা বলবে তাই করব। আর দলের নির্দেশে বিধানসভা নির্বাচনে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলেও জেঠুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি।” তবে ভোট ভাগাভাগির অঙ্ক নিয়ে চিন্তিত মৌসমও। তিনি বলেন, “বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আমাদের আটকাতেই হবে। তাই এখনও আমি সকলকে তৃণমূলে আসার জন্য অনুরোধ করছি।” যদিও কংগ্রেস ও তৃণমূলকে একযোগে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র। তিনি বলেন, “রাজ্যের মতো উত্তর মালদহেও বিজেপির ঝড় উঠেছে। মৌসম দলবদলেও ঝড় থেকে রেহাই পাবে না।”

Mausam Noor Congress BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy