সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নবান্নে। ছবি: প্রদীপ আদক
এত দিন রাজ্যের বিরোধী দলগুলি তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলত। বুধবার বিজেপির বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল ভাঙানোর।
এ দিন নোটবন্দির বর্ষপূর্তিতে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, প্রশাসন চালানো ছোড়ে শুধু রাজনীতি করার দিকেই মন দিয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল। সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজ্যে রাজ্যে দল ভাঙার খেলা চালাচ্ছে তারা।
মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ খণ্ডন করে নোটবন্দির সাফল্য প্রচারে রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা এ দিন বলেন, ‘‘দল হিসাবে আমরা সুশাসন ও জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিই। সে জন্যই বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: দুই সিপিএম নেতাই চক্রী, বললেন ঋতব্রত
যা মানেন না মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা এখন ভাষণ বেশি দিচ্ছে। কেন্দ্রের সব মন্ত্রী মন্ত্রকের কাজ ছেড়ে রাজ্যে রাজ্যে দলকে বাড়িয়ে তোলার ব্যাপারে বেশি মনোযোগী।’’ মমতার আরও অভিযোগ, ‘‘এজেন্সিকে ব্যবহার করে বিজেপি দল বাড়ানোর কাজ করছে। সরকারের কাজ না করে কী ভাবে দলটাকে মজবুত করা যায়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করা যায়, আর দাঙ্গা বাধানো যায়, এই কাজটাই ওরা করছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের নেপথ্যে কারণও দেখছেন অনেক রাজনীতিক। তাঁদের কেউ কেউ মনে করছেন, গত এক বছরে ত্রিপুরায় পুরো তৃণমূল দলটাই বিজেপিতে চলে গিয়েছে। বিধায়কদের সকলেই এখন বিজেপির হয়ে আসন্ন বিধানসভা ভোটে লড়বেন। মণিপুরেও তৃণমূলের এক বিধায়ক বিজেপি-কে সরকার গড়তে সমর্থন দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কদের একাংশ বিজেপি প্রার্থীদের ভোট দিয়েছিলেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী রিপোর্ট পেয়েছেন। সর্বশেষ ঘটনা হল, মুকুল রায়ের দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া।
তৃণমূলের অন্দরেও অনেকে মনে করছেন, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চাপে পড়েই দলীয় নেতারা তৃণমূল ছাড়ছেন বা বসে যাচ্ছেন। এ জন্য সর্বাগ্রে এসেছে সিবিআই-ইডি’র মতো সংস্থার নাম। এই দুই সংস্থা নারদ, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে একের পর এক নেতা-সাংসদ-মন্ত্রীকে তলব করছেন। তা থেকে বাঁচতে অনেকেই গোপনে বিজেপিমুখো হচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভেরও কারণ তাই। তিনি নবান্নে এ দিন বলেন, ‘‘সব রাজ্যে গিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক সভা করছেন, হুমকি দিচ্ছেন। কখনও অন্য দলকে ভাঙছেন।’’ যা শুনে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘‘বাংলার বিধানসভায় ৯ কংগ্রেস ও এক সিপিএম বিধায়ককে কারা ভাঙিয়েছেন। দল উনি ভাঙেন। আমরা জোড়ার কাজ করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy