পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাতের ডাক ‘শূন্য কলসি’র আস্ফালন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। পুরুলিয়ায় শাহর বক্তৃতার পরেই রাজ্যের তিন প্রভাবশালী মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অমিত মিত্র এবং ফিরহাদ হাকিম এ নিয়ে মুখ খোলেন। তাঁদের বক্তব্য, মমতাকে রাজ্য থেকে উৎখাত করা তো দূরের কথা, মানুষ বিজেপিকেই এ বার কেন্দ্র থেকে উৎখাত করবে।
শাহ কী বলেন, সে দিকে নজর রেখেছিল রাজ্যের শাসক দল। তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়, সন্ত্রাস, কেন্দ্রীয় প্রকল্প ঠিকমতো রূপায়ণ না করার মতো নানা অভিযোগ এনেছেন। সব অভিযোগের জবাব দিতে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার বাইরে থেকে এসে এক জন এখানে সরকার এবং জননেত্রীর সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলেছেন, তাতে বাংলার মানুষ ছেড়ে কথা বলবে না।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে ৩৯টি প্রকল্প কেটে দেওয়া হয়েছে, ২৮টি ছেঁটে দেওয়া হয়েছে। ৯০ শতাংশ থেকে বরাদ্দ কমিয়ে ৫৬-৬০% নামিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা তা সত্ত্বেও মানুষের জন্য প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাচ্ছি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ১৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ, সেতু, রাস্তাঘাট, কী না হয়েছে। গ্রামে ঘুরে দেখুন রাস্তা কী হয়েছে, জল, স্কুলের উন্নয়ন কৌথায় পৌঁছেছে। ক্যাগ বলছে এই সরকার যা ঋণ করেছে ৩৫-৪০% উন্নয়নের কাজে ব্যয় করেছে।’’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আমাদের ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন কি মানা হয়েছে? অথচ তার পরেও শাহ বলছেন, আমাদের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে!’’ অর্থমন্ত্রীর দাবি, ‘‘ভারতের কন্ট্রোলার ও অডিটর জেনারেল বলেছেন রাজ্য যা ধার রাজ্য নিচ্ছে, তার প্রায় ৩৫% উন্নয়নের কাজে খরচ হচ্ছে।’’
তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু বলেন, ‘‘হোসপাইপের মতো কেন্দ্রের টাকা বিজেপিতে ঢুকে যাচ্ছে। চার্টার্ড প্লেনে করে আসছেন, যাচ্ছেন, থাকছেন, খাচ্ছেন। এত টাকা আসছে কোথা থেকে? দুর্নীতির নাম করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ভয় দেখানো হচ্ছে।’’ মমতাকে উৎখাতের ডাক দেওয়ায় শাহের উদ্দেশে পার্থবাবুর কটাক্ষ, ‘‘শূন্য কলসি বাজে বেশি। আগে উনিশ পর্যন্ত বিজেপি থাকুক, তার পরে বাংলার কথা ভাববে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিড়ালকে পাম্প দিয়ে বাঘ করা যায় না। মমতার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার মতো কেউ নেই। দিল্লি থেকে একঝাঁক নেতা এমনকী পুরো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এসে দাঁড়ালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সামলাবেন বাংলা।’’
পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত লুপ্ত হয়ে এখন শুধুই বোমা তৈরির কারখানা চলছে বলে শাহ যে মন্তব্য করেছেন, তার জবাবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘অমিত শাহ তো গুজরাতে এনকাউন্টারে গুলি করে মানুষকে মারার শব্দ, মানুষকে জ্বালিয়ে দেওয়ার হাহাকারের শব্দ শুনতে অভ্যস্ত। উনি রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি শুনতে অভ্যস্ত নন। তাই রবীন্দ্রসঙ্গীতকে উনি বোমার আওয়াজ বলে ভুল করছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মানুষই বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে উৎখাত করবে। ফেডারেল ফ্রন্ট আগামী দিনে বিজেপিকে ছুড়ে ফেলে দেবে। সেই ফ্রন্টের কারিগর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy