Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকার বিয়ে রুখতে ভর্তির সময় মুচলেকা

গত এক বছরে প্রায় ২৫ জন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে রুখেছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ বার আরও বড় পদক্ষেপ। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেই বিয়ে দেবেন, এমন মুচলেকা দিয়েই মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে হচ্ছে অভিভাবকদের।

অভিজিৎ সাহা
হবিবপুর (মালদহ) শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:১৭
Share: Save:

গত এক বছরে প্রায় ২৫ জন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে রুখেছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ বার আরও বড় পদক্ষেপ। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেই বিয়ে দেবেন, এমন মুচলেকা দিয়েই মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে হচ্ছে অভিভাবকদের। নাবালিকা ছাত্রীদের বিয়ে রুখতে মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের একেবারে সীমান্তবর্তী গ্রামের দাল্লা চন্দ্রমোহন বিদ্যা মন্দির কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্রীদের উদ্যোগেই বিয়ে রোখা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের দাবি, বাড়িতে বিয়ে ঠিক হলেই মেয়েরা এসে জানায়। তারপরেই তাঁরা কখনও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে, আবার কখনও নিজেরা গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ে বন্ধ করেন। প্রধান শিক্ষক জয়দেব লাহিড়ি বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামে আমাদের স্কুল। অতীতে নাবালিকা বহু ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এখন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে উৎসাহিত হয়ে ও নিজেদের জীবন গড়ার লক্ষ্যে বিয়ে রুখতে তৎপর হয়েছে অনেক নাবালিকাই। আর তারা এগিয়ে আসায় আমরাও অনেক নাবালিকার বিয়ে রুখেছি।” তাই এ বার স্কুলে ভর্তির আবেদন পত্রে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে ছাত্রীদের বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ করা থাকছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গ্রামের কোথাও কোনও নাবালিকার মেয়ের বিয়ে হলে সেই খবর স্কুলে পৌঁছতে গোয়েন্দা বাহিনীও তৈরি করে স্কুল। সেই বাহিনীতে রয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাই।

হবিবপুর ব্লক সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে বৈদ্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। ষেখানে স্কুল সেখান থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। পার্বতীডাঙা, আদ্রাগাছি, পান্নাপুর, দাল্লা সহ ছ’টি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পড়তে আসে। সীমান্তবর্তী এলাকায় দারিদ্র নিত্যসঙ্গী হওয়ায় নাবালিকা অবস্থায় মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে ওই গ্রামগুলিতে। স্কুলসূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে মোট ২২০০ পড়ুয়া রয়েছে। তার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ১১০০ জন। স্থানীয় বাসিন্দা দীপক বিশ্বাস, অজয় বিশ্বাসরা বলেন, “অনেকেই জানেন না নাবালিকার বিয়ে দিতে নেই। তাই মেয়ের বিয়ে ঠিক করে পরবর্তীতে বিপাকে পড়েন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor Girl Marriage School Bondage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE