দেশে ফিরলেও এখনই বাড়ি ফেরা হচ্ছে না পাক সেনার হাত থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউয়ের। এই অবস্থায় স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে নিজেই পঞ্জাবের পঠানকোটে যেতে চান স্ত্রী রজনী। জানালেন, আগামী সপ্তাহেই তিনি পঠানকোটে স্বামীর কর্মস্থলে যেতে পারেন।
পূর্ণম পাক সেনার হাতে বন্দি হওয়ার পর অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই পাহাড়ি পথ পেরিয়ে হিমাচলের কাংড়ায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদর দফতরে গিয়েছিলেন রজনী। গিয়েছিলেন পঠানকোটের ফিরোজ়পুরেও। স্বামীকে ফেরাতে সাহায্য চেয়েছিলেন সব মহলের কাছে। অবশেষে তিন সপ্তাহ বাদে বুধবার সকালে মুক্তি পান পূর্ণম। দেশে ফেরার পর স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথাও বলেছিলেন তিনি। এর পর বুধবার রাত ৯টা নাগাদ আবার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে স্ত্রীর।
রজনী বলেন, ‘‘রাতেও কথা হয়েছে। বলল খাবার খেয়েছে। সব ঠিক আছে। ওর (পূর্ণম) বাড়ি ফিরতে দেরি হলেও অসুবিধা নেই। দেশে ফিরেছে, কর্মস্থলে ফিরেছে, এতেই শান্তি। বাড়ি ফিরলে বড় করে ওয়েলকাম পার্টি হবে।’’
স্ত্রী জানান, এখন সীমান্তে যা পরিস্থিতি, পাকিস্তানের সঙ্গে যে টানাপড়েন চলছে, তাতে এখনই পূর্ণম বাড়ি ফিরতে পারবেন না। তাই আগামী সপ্তাহে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন তিনি। রজনী বলেন, ‘‘বিএসএফের সদর দফতরে কথা হয়েছে। ওরা হয়তো ডাকবে। আমি পঠানকোট যেতে পারি।’’ রজনী আরও জানান, পাক সেনার হাতে আটক হওয়ার পর ভাল করে ঘুমোতে দেওয়া হয়নি পূর্ণমকে। গুপ্তচর ভেবে তাঁর উপর নানা রকম মানসিক নির্যাতন চলেছে।
গত রবিবার থেকে ফোনে নিয়মিত রজনীর খবর নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার পূর্ণম দেশে ফেরার পরেও তিনি বার্তা দিয়েছেন। বাড়ির লোকের আর্জি মেনে সন্ধ্যায় রিষড়ার বাড়িতে যান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার পূর্ণমের বাড়িতে যান স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁরা দেখা করেছেন রজনীর সঙ্গে।
সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘একজন জওয়ান দেশের জন্য কর্তব্য পালন করতে গিয়ে এ রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন। ওঁর মুক্তি পাওয়া একটা বিরাট আনন্দের ব্যাপার। গোটা দেশের মানুষ ওঁর জন্য প্রার্থনা করেছে। এ রকম একজন সৈনিকের জন্য আমাদের গর্ব হয়। ওঁর স্ত্রীও সমানতালে লড়াই করেছেন।’’