Advertisement
০২ মে ২০২৪

ইডলি চাই, আন্দোলন চাই, বায়না কারনানের

বৃহস্পতিবার কারনানকে এসএসকেএম হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। বুকে ব্যথা ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে ভুগছেন কারনান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৪:৪১
Share: Save:

কখনও ইডলি আর তেঁতুলের চাটনি ছাড়া না-খাওয়ার হুমকি। কখনও বা গ্রেফতারির বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি। কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিন্নাস্বামী কারনানের বায়নাক্কা হিমশিম খাচ্ছে এসএসকেএম।

বৃহস্পতিবার কারনানকে এসএসকেএম হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। বুকে ব্যথা ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে ভুগছেন কারনান।

কারনানকে ভর্তি করানোর পর থেকেই প্রবল চাপে পিজি-কর্তৃপক্ষ। তিনি কখন কী চেয়ে বসেন, তা নিয়ে তটস্থ গোটা হাসপাতাল। চিকিৎসকের পরামর্শে রাতে তাঁকে রুটি-তরকারি দেওয়া হয়েছিল। কারনান জানিয়ে দেন, হাসপাতালের খাবার তিনি খাবেন না। পছন্দসই খাবার চাই। পছন্দমতো খাবার না-পেলে তিনি উপোস করেই থাকবেন।

হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়, ‘‘মেনুতে ধোসা, ই়ডলি তার সঙ্গে তেঁতুলের চাটনি রাখতে হবে বলে গোঁ ধরেন বিচারপতি। তাঁর যা শারীরিক অবস্থা, তাতে ধোসা-ইডলি খাওয়া যাবে না বলে আমরা বোঝালেও তিনি শুনতে চাননি।’’ হাসপাতালের এক প্রশাসক তাঁকে বলেন, তিনি চিকিৎসককে রাজি করাতে পারলে তাঁর পছন্দের খাবারের ব্যবস্থা হতে পারে। কিন্তু চিকিৎসক জানিয়ে দেন, এ-সব খাওয়া চলবে না। কারনানকে বোঝানো হয়, বাইরের খাবার খেলে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে প়়ড়তে পারেন। তাঁর শরীরের যা অবস্থা, তাতে বাইরের খাবার চলবে না।

কিন্তু কোনও কথাই শুনতে চাননি ওই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। অনড় ছিলেন চিকিৎসকেরাও। শেষ পর্যন্ত রুটি-তরকারি দিয়েই রাতের খাবার সারেন কারনান। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাতের ইডলি পর্ব শেষ হওয়ার পরে সকাল থেকে বিচারপতি আন্দোলনের কথা বলতে থাকেন চিকিৎসক, নার্সদের কাছে।’’ কীসের আন্দোলন? কারনানের বক্তব্য, তাঁকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিভিন্ন জায়গায় ‘কারনান-ঝড়’ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মানুষের মিছিল স্রোতের মতো এগিয়ে আসছে। সেই মিছিলে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিচারপতির বক্তব্য ধৈর্য ধরে শুনেছেন হাসপাতালের কর্মীরা। তাতে কাজও হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়। এক হাসপাতাল-কর্তার কথায়, ‘‘বিচারপতির সব কথার অর্থ না-বুঝলেও মন দিয়ে শুনলেই তিনি শান্ত থাকছেন। এ দিন দুপুরে তিনি হাসপাতালের খাবার খেতে আর আপত্তি করেননি।

হাসপাতাল জানায়, কারনানের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আলাদা ভাবে ডায়াবেটিস এবং নিউরোলজির চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। শনিবার মেডিসিন, কার্ডিওলজি, নিউরোলজির চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গড়া হবে। কারনানের পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সেই বোর্ডই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE