প্রশাসক: টাইগার হিলের পথে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
গোর্খাল্যান্ডের স্লোগানেও পুরভোটে পাহাড়ে তৃণমূলের উত্থান ঠেকানো যায়নি। তার পরেই পাহাড়কে রাজ্যসভার সাংসদ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিমল গুরুঙ্গদের ‘কলকাতায় বসে পাহাড়বাসীকে শাসনের’ অভিযোগের জবাব দিতে দ্বিমুখী চাল দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক দিকে, দার্জিলিঙের সর্বত্র চষে ফেললেন জনসমর্থন বাড়ানোর লক্ষ্যে। অন্য দিকে, এখানে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসিয়ে বোঝাতে চাইলেন, পাহাড় বাংলার কতটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।
মমতার এই কৌশলের মোকাবিলায় এই মুহূর্তে বাংলা নিয়েই আন্দোলন শুরু করেছে মোর্চা। এমনকী, মন্ত্রিসভার বৈঠক যখন চলবে, তখন পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার লোক জড়ো করে এই নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভেরও হুমকি দিয়েছেন গুরুঙ্গ। পাশাপাশি গুরুঙ্গের দূত হয়ে কলকাতায় গিয়ে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রোশন গিরি।
এরই সঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না মোর্চা নেতারা। ভানুভবন চত্বরের মঞ্চ থেকে এ দিন প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ৪০-৪২ জন মন্ত্রী ও সমসংখ্যক আমলাকে পর্যটন মরসুমে পাহাড়ে আনতে যে বিপুল খরচ, তার যৌক্তিকতা কী? মোর্চার আরও দাবি, এক মন্ত্রিসভার বৈঠক করতেই কোটি টাকার ওপরে খরচ করা অর্থহীন। বরং ওই টাকায় পাহাড়ে পর্যটকদের জন্য আরও কয়েকটি সুলভ শৌচালয়, সস্তার বিশ্রামাগার তৈরি করা যেত।
আরও পড়ুন: তৃণমূলকে আয়কর নোটিস
কিন্তু এ সবে তোয়াক্কা করছেন না মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি তরফে দাবি, বৈঠক করে বেশির ভাগ মন্ত্রীই যাতে শিলিগুড়ি ফিরে যান, তেমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। প্রশাসনের শীর্ষ স্তর এখন চাইছে, বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ২০-২৫ জন মন্ত্রী যোগ দিলেই হবে। বাকিরা না এলেও সমস্যা নেই।
প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানান, পাহাড়ে বছরে দু’টো মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিঙে বসে গোটা রাজ্যের সমস্যা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্ত্রিসভা, এর তাৎপর্য অসীম। তোমরা-আমরা আলাদা নই— পাহাড়কে এই বার্তা দেওয়ার এর থেকে ভাল উপায় আর কীই বা হতে পারে!
মমতার এই চাপের মুখে বিজেপিকে খড়কুটো হিসেবে ধরতে চেয়েছিলেন গুরুঙ্গ। কিন্তু পাহাড় যে বাংলার অবিচ্ছেদ্য অংশ, এই কথাটা এ দিন দিলীপ ঘোষও বুঝিয়ে দিয়েছেন রোশন গিরিদের। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে বাংলা ঐচ্ছিক হোক, আবশ্যিক নয়। কিন্তু সমতলের লোকের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাহাড়বাসীর বাংলা শেখা প্রয়োজন।’’ জিটিএ-তে কাজ চালাতে পারছেন না বলে গুরুঙ্গরা গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে ফিরে যেতে চাইছেন— এর দায় রাজ্য প্রশাসনের উপরে চাপিয়েও শেষ অবধি দিলীপ বলেছেন, তাঁরা এই পৃথক রাজ্যের দাবি সমর্থন করেন না। বৈঠক শেষে রোশন গিরির সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy