Advertisement
২২ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

‘দেশে থেকে তো তা হলে কত কী হয়েছে’! মক্কায় বসে পঞ্চায়েতের মনোনয়ন নিয়ে বিস্মিত হাই কোর্ট

কলকাতা হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যা হয়েছে তা তদন্তযোগ্য অপরাধ। কোন তদন্তকারী সংস্থা মক্কা থেকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনার তদন্ত করবে, সেটা পরবর্তী শুনানিতে জানিয়ে দেবে আদালত।

calcutta high court

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ১৫:৪১
Share: Save:

সৌদি আরবে বসে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিংহের মন্তব্য, ‘‘এত বড় অভিযোগ আদালতে না এলে কী হত? বিদেশে থাকা প্রার্থীর মনোনয়ন গণ্য হয়ে যেত। তখন কী করত কমিশন?’’ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘দেশের বাইরে থেকে এমন ঘটনা হয়েছে। তা হলে দেশের মধ্যে থেকে মনোনয়নে আরও কত কী হয়েছে।’’ তিনি জানান, আদালত এমন বিষয় নিয়ে চিন্তিত। এ ক্ষেত্রে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক। পাশাপাশি এই ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।

মিনাখাঁর কুমারজোলর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল প্রার্থী মোহারুদ্দিন গাজি গত ৪ জুন সৌদি আরবে যান। ১৬ জুলাই তাঁর রাজ্যে ফেরার কথা। কিন্তু প্রার্থী অনুপস্থিত হলেও তাঁর মনোনয়নপত্র ঠিক জমা পড়ে যায়। সৌদি আরবে থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে মিনাখাঁয় মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মোহারুদ্দিন, এই প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। এ নিয়ে টুইট করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিপিএম। মামলাকারীর আইনজীবী সলোনি ভট্টাচার্য ও শামীম আহমেদ অভিযোগ করেন, ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক এবং পঞ্চায়েতের রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে যোগসাজশ না থাকলে প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সম্ভব ছিল না। এর পর কত তারিখ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা পড়ল, কবে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তাঁর নাম আপলোড হল, এই সংক্রান্ত তথ্য হাই কোর্টে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি সিংহ। পাশাপাশি অভিবাসন দফতরকেও এই মামলায় পার্টি করার নির্দেশও দেওয়া হয়। এর পর ওই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নও বাতিল করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার আদালত বলেছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার সত্যাসত্য খুঁজে বার করা হয়েছে। অভিযোগ সত্য বলেই তা জানার পরে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এমনকি, দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে।

শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী জানান, এটা একটি সংগঠিত অপরাধ। দেশের বাইরে রয়েছেন প্রার্থী। তদন্তের স্বার্থে সিবিআই ইন্টারপোলের সাহায্য চাইতে পারে। এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্র খোঁজার জন্য তদন্ত জরুরি। এর পর বিচারপতি সিংহ নির্দেশ দেন ওই প্রার্থীর মনোনয়ন পর্বের যাবতীয় নথি সংরক্ষণ করতে হবে। তা ছাড়া, দায়িত্বপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ শুরু করার নির্দেশ দেন। আদালত বলে এটি তদন্তযোগ্য অপরাধ। কোন সংস্থা তদন্ত করবে পরবর্তী সময়ে আদালত সেই নির্দেশ দেবে। আগামী ১৯ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE