হাই কোর্ট ডেকে পাঠাল পর্ষদ সভাপতিকে। ফাইল চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামনুজ গঙ্গোপাধ্যায়কে হাজিরা দিতে হতে পারে কলকাতা হাই কোর্টে। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ না মানার অভিযোগ রয়েছে। আদালত অবমাননার মামলায় পর্ষদ সভাপতিকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, ২০ ফেব্রুয়ারির আগে আদালতের নির্দেশ কার্যকর না হলে ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার রামানুজকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। তবে সকাল সাড়ে ১০টার সময় তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও, পরে তা দুপুর ২টো করা হয়।
যে মামলায় পর্ষদ সভাপতিকে ডেকে পাঠিয়েছে আদালত, সেটি প্রায় ১২ বছরের পুরনো। ১২ বছর ধরে চাকরি পাননি পূর্ব মেদিনীপুরের অঞ্জনকুমার খাটুয়া। তিনি একটি চোখে দেখতে পান না। গত মাসে হাই কোর্ট তাঁকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই মতো অঞ্জনের সুপারিশপত্র পর্ষদকে পাঠায় এসএসসি। কিন্তু তার পরও চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, অঞ্জনের নিয়োগপত্র অনেক দিন ধরেই প্রস্তুত রয়েছে। তাঁকে যে হাই কোর্ট ডেকে পাঠিয়েছে, তা তিনি আনন্দবাজার অনলাইনের মাধ্যমেই জেনেছেন বলে দাবি করেন। তবে ২টোর সময় তিনি আদালতে হাজিরা দেবেন কি না, তা নিশ্চিত করে বলেননি রামানুজ।
পর্ষদ অফিসে এই চাকরিপ্রার্থী নিয়োগপত্র নিতে গেলে তাঁকে অপমান করা হয় বলে অভিযোগ। অঞ্জনের অভিযোগ, পর্ষদ অফিসের এক আধিকারিক তাঁকে বলেন, “আপনারা কি মনে করেন, যখন খুশি নিয়োগপত্র দেওয়া যায়? আপনারা মেদিনীপুর থেকে আসেন, প্রচুর টাকা রয়েছে। মামলা দায়ের করে দেন। ওই আধিকারিক নাকি তাঁকে এ-ও বলেন যে, “কলকাতা হাই কোর্ট এমন খারাপ নির্দেশ দেবে, আর তা পালন করতে হবে! আপনি অন্ধ হয়ে চাকরি করতে চলে এসেছেন। আপনি কী ভাবে পড়াবেন?” মামলাকারীর আইনজীবী সুভাষ জানা জানান, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, তা হলফনামা আকারে বৃহস্পতিবারই জমা দেবেন।
২০১১ সালে যোগ্যতানির্ণায়ক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন অঞ্জন। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁর প্রতিবন্ধী শংসাপত্রকে স্বীকার করতে চায়নি। তাঁকে নতুন করে শংসাপত্র তৈরি করতে বলে। তখন অঞ্জন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলে আদালত কমিশনকে জানায়, প্রয়োজনে কমিশন মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে অঞ্জনকে শংসাপত্র দিক। কিন্তু তাঁকে নতুন করে শংসাপত্র আনার কথা বলতে পারে না কমিশন। বিষয়টি তখনকার মতো মিটে যাওয়ার পর পর্ষদকে নিয়োগপত্র দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হয়নি বলে মনে করছে উচ্চ আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy