Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Amphan Relief

আমপান: মূল বিষয় ‘আড়ালে’, রিপোর্ট নস্যাৎ

ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মূল বিষয়কে আড়াল করতে এই ধরনের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার নতুন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০৫
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় আমপানের ধাক্কায় বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ-ক্ষতিপূরণ নিয়ে ‘দুর্নীতি’র মামলায় রাজ্য সরকারের পেশ করা রিপোর্ট নস্যাৎ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে সোমবার ওই রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য। তা ফিরিয়ে দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মূল বিষয়কে আড়াল করার জন্য এই ধরনের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর নতুন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে সরকারকে।

২০২০ সালে আমপানের দাপটে উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলা বিপর্যস্ত হয়ে যায়। সেই বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠায় প্রশাসন। কিন্তু সেই ত্রাণ বিলি নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আলোচ্য মামলাটি উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ত্রাণ-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে। বসিরহাট-২ ব্লকের ঘোড়ারস কুলীন গ্রামে পাঁচটি ট্রাকে প্রায় দু’‌কোটি টাকার ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ, সেই সব জিনিসপত্র স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের বাড়ির গুদামে মজুত করা হয়। পরে সেই ত্রাণসামগ্রী পাচারের সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ তা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এফআইআর করা সত্ত্বেও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলে হাই কোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ দিন হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ত্রাণসামগ্রী নিয়েও দুর্নীতি হচ্ছে! এত বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে মানুষের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়াই তো কাম্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এ দিন রাজ্যের কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করেছে পুলিশ? আদালত সূত্রের খবর, রাজ্যের পরবর্তী রিপোর্টে পুলিশি পদক্ষেপ-সহ সবিস্তার তথ্য যথাযথ ভাবে উল্লেখের নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা অভিযোগ করেছিলাম। পার্টি অফিস থেকে যাদের লিস্ট গিয়েছিল, তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছিল। যাদের বাড়িঘর কিছুই ভাঙেনি। আর যারা প্রকৃত গরিব, টাকা পেতে তাদের ঘুষ দিতে হয়েছে। কারা কারা পেয়েছে, সেই লিস্ট আপনারা দেখেছেন। প্রধান, পরিবারের লোকজন সব জায়গায় টাকা পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এটা স্বীকার করেছিলেন এবং টাকা ফেরত দিতে বলেছিলেন। যাঁরা চুরি করলেন, তাঁদের শাস্তি হবে না, টাকা ফেরত দিয়ে দিলেই সাত খুন মাফ!” দিলীপের অভিযোগ, তদন্তের নামে সব কিছু ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছিল। সিআইডি বা সিট কিছুই করেনি। তাই উচ্চ আদালত তাদের কাজে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। সুর আরও একটু চড়িয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “কেন্দ্রের টাকা লুট করেছে তৃণমূলের নেতারা। আমি দাবি করছি, তাড়াতাড়ি রিপোর্ট পেশ করা হোক। দোষীরা শাস্তি পাক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE